বেসরকারি খাতের আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফরমান আর চৌধুরীকে তিন মাসের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ নাদিম, ডিএমডি ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের প্রধান আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং ট্রেজারি বিভাগের প্রধান মো. আব্দুল মবিনকেও ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। সম্প্রতি একের পর এক ব্যাংকে জালিয়াতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে বিশেষ অডিট শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে চলতি সময়ে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো ব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সংখ্যা দাঁড়াল সাত জনে। এর আগে সর্বশেষ গত ৬ এপ্রিল ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের এমডি মুহাম্মদ মুনিরুল মওলাকে তিন মাসের ছুটিতে পাঠানো হয়। তারও আগে ৫ জানুয়ারি এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ইউনিয়ন ব্যাংক এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের এমডিদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছিল।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত ১৫টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে রয়েছে আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকও। ৩ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির পুরনো পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করা হয়। নতুন পর্ষদের নেতৃত্বে রয়েছেন লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের সাবেক এমডি খাজা শাহরিয়ার। নতুন বোর্ড দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নানা অনিয়ম ও অসঙ্গতি চিহ্নিত করা হয়, যা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে বিস্তারিত অবহিত করা হয়।
ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন আলোচিত ও বিতর্কিত ব্যবসায়ী গ্রুপ এস আলমের কর্ণধার আব্দুস সামাদ লাবু, যিনি দীর্ঘদিন পর্ষদ নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই পদক্ষেপগুলো ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর অবস্থানেরই প্রতিফলন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।