পণ্য আমদানির বিপরীতে সময়মতো বিল পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে দেশের অনেক ব্যাংক, যার ফলে বিদেশি ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হচ্ছে এবং দেশের আর্থিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে মেয়াদোত্তীর্ণ স্বীকৃত বিল পরিশোধ নিশ্চিতে তদারকি জোরদার করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, কোনও বিল যদি নির্ধারিত সময়ে পরিশোধযোগ্য না হয়, তবে তা সংশ্লিষ্ট বিদেশি ব্যাংককে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠির মাধ্যমে জানাতে হবে। একইসঙ্গে বিল পরিশোধে অব্যবস্থাপনা থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখাগুলোর পারফরম্যান্স পর্যালোচনা করে বিশেষ পরিবীক্ষণ ব্যবস্থাও নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের নভেম্বরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্বীকৃত বিলের পরিমাণ ছিল ৫২ কোটি ডলার, যার মধ্যে ২০ কোটি ডলার বৈদেশিক এবং ৩২ কোটি ডলার স্থানীয় বিল। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি শেষে এ পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ২৪ কোটি ডলারে। এর মধ্যে ৯ কোটি ডলার বৈদেশিক এবং ১৫ কোটি ডলার স্থানীয় বিল।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ বিল সময়মতো পরিশোধিত না হলে তা ব্যাংকিং খাতের ভাবমূর্তি ও বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিবেশকে বিঘ্নিত করে। তাই এসব বিল মামলাধীন কিনা, বিলম্বের কারণ, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বৃহৎ শিল্পপ্রতিষ্ঠান কিনা—এসব ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করে দ্রুত সমাধানে উদ্যোগ নিতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে সময়মতো আমদানি বিল পরিশোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিল পরিশোধে অবহেলা বা ব্যর্থতা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না। এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ব্যক্তিগতভাবে দায়বদ্ধ হবেন এবং প্রয়োজনে শান্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নানা সংকটের মধ্য দিয়ে যাওয়া দেশের বৈদেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ ধরনের কড়াকড়িকে খাতসংশ্লিষ্টরা সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।