আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি কমে ৮ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চলমান বৈঠকে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ও মূল্যস্ফীতি পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
এরআগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানায়, সদ্য বিদায়ী মার্চ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে, আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে, আর জানুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
আরিফ হোসেন খান বলেন, "আইএমএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি আরও কমবে। এটি কেবল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একক দায়িত্ব নয়।"
তিনি আরও বলেন, সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের শরীরী ভাষা থেকেই বোঝা যাচ্ছে তারা সন্তুষ্ট। যদি কোনও বিষয়ে সন্তুষ্ট না হতেন, তবে তারা পাল্টা প্রশ্ন করতেন, যা এখন পর্যন্ত হয়নি।
রিজার্ভ হিসাবসংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি জানান, বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আইএমএফের নির্দেশনা অনুযায়ী গণনা করা হচ্ছে এবং এতে কোনও ধরনের দ্বৈত গণনার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে সংস্থাটি সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট নিয়ে তিনি বলেন, দেশের ১১টি তারল্য সংকটে থাকা ব্যাংকের মধ্যে ৬টির অবস্থার উন্নতি হয়েছে, ফলে তাদের আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহযোগিতা লাগবে না। তবে এখনও ৫টি ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির আওতায় চতুর্থ কিস্তিতে ২৩৯ কোটি ডলার পাবে বাংলাদেশ। এ অর্থ ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় গত ৬ এপ্রিল থেকে ঢাকায় অবস্থান করছে আইএমএফ প্রতিনিধি দল। তারা ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের সঙ্গে বৈঠক শেষে চূড়ান্ত প্রেস ব্রিফিং করবে।
বিশ্লেষকদের মতে, মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনতে সরকারের নীতিগত সমন্বয়, বাজার মনিটরিং জোরদার, এবং নিত্যপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।