নরওয়ের সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি নৌ যোগাযোগ স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন আজ রবিবার (১০ নভেম্বর) সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে সাক্ষাৎ করলে এলে উপদেষ্টা এ আহ্বান জানান।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ থেকে রফতানির গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। বাংলাদেশের গার্মেন্ট পণ্য ইতোমধ্যে নরওয়ের বাজারে জায়গা করে নিয়েছে। বর্তমানে ট্রান্সশিপমেন্টের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোয় কার্গো পৌঁছাতে ৪০ থেকে ৪৫ দিন বা তার বেশি সময় লাগে, যেখানে নরওয়েতে সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপিত হলে চট্টগ্রাম থেকে নরওয়ের যেকোনও বন্দরে ১৫ দিনের মধ্যে পণ্য পৌঁছানো সম্ভব। এতে গড়ে ১৮ থেকে ২৩ দিন কম সময় লাগবে। এছাড়াও, মালমাল বহন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
তাই বাংলাদেশ ও নরওয়ের মধ্যে এ বিষয়ে একটি বিশেষ নৌ-চুক্তি স্বাক্ষরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা।
উপদেষ্টার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়ে নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক, উন্নয়ন সহযোগিতা ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। নরওয়ের বিভিন্ন কোম্পানি জাহাজ শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরে বাংলাদেশে কাজ করতে আগ্রহী।
উপদেষ্টা বলেন, মোংলা ও মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরের ডকইয়ার্ড নির্মাণেই নরওয়ে কারিগরি ও আর্থিক বিনিয়োগ করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, নরওয়ে সরকারের মতো বাংলাদেশ সরকারও সমুদ্রে গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ কমিয়ে আনতে কাজ করছে। এ লক্ষ্যে বন্দরগুলোকে ডিজিটাইজেশনের আওতায় আনতে অটোমেশন প্রক্রিয়া চালু করা হচ্ছে। নরওয়ে সরকার বাংলাদেশের বন্দরগুলোকে গ্রিন পোর্টে রূপান্তরিত করতে সহযোগিতা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন উপদেষ্টা।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসব বিষয়ে বাংলাদেশকে নরওয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি জাহাজ চলাচলের বাতিঘর নির্মাণসহ জাহাজে বিদ্যুতায়ন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, মেরিটাইম সেক্টরে বাংলাদেশের শক্তিশালী অংশগ্রহণ রয়েছে। মেরিটাইম সেক্টরের উন্নয়নে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় আন্তর্জাতিক নৌ-সংস্থার (আইএমও) সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মেরিটাইম সেক্টরের বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী বিষয়েও বাংলাদেশের ভূমিকা রয়েছে মর্মে তিনি মত প্রকাশ করেন। উপদেষ্টা আসন্ন ২০২৫ সালে আইএমও নির্বাচনে বাংলাদেশের পক্ষে নরওয়ের সমর্থন প্রত্যাশা করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, নরওয়ে সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে।
এ সময়ে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব দেলোয়ারা বেগম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।