কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। জাপান সরকারের ঋণে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে একনেক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে বিকাল ৩টায় শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানান পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
উপদেষ্টা বলেন, মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্রবন্দর তৈরি করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে জাপানের অর্থায়নকে সরকার প্রাধান্য দেবে। কারণ কোন দেশ এটি নির্মাণ করবে তা নিয়ে বহু বিতর্ক হয়েছে। সব যাচাই-বাছাই শেষে জাপানকে নিরাপদ মনে করছে বর্তমান সরকার। তাদের ঋণের শর্ত ভালো। প্রকল্পে অনিয়ম হলে তা বিচারের জন্য দেশটিতে আইনি কাঠামোও বেশ শক্ত।
এ প্রকল্প সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মধ্যে এটাই সব থেকে বড় অবকাঠামো প্রকল্প হবে। এই প্রকল্পের অনেক ভূ-রাজনৈতিক তাৎপর্যও আছে। কারা এটা করছে সেটাও একটা বড় বিষয়। আমরা সবাই জানি একটি বড় গভীর সমুদ্র বন্দর আমাদের অবশ্যই লাগবে। বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্য বাড়বে, তখন এটা লাগবে। গভীর সমুদ্র বন্দর না হলে পরিবহন খরচ ও সময় অনেক বেশি হয়।
তিনি জানান, আমরা সাহস করে এই প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি এই কারণেই যে অনেক দিন ধরে চীন করবে না ভারত করবে এ নিয়ে বহু টানাপড়েন চলছিল। কোনও কিছুই হচ্ছিল না। আমরা ভাবলাম এই কারণে যে, জাপান খুব সহজ শর্তে ঋণ দেয়। জাপানি প্রকল্পগুলো ঠিক খরচ ও সময়ের মধ্যে শেষ হয়। জাপানি প্রকল্পে দেশীয় কোনও ঠিকাদার দুর্নীতি করেছে এমন কোনও প্রমাণ আমি নিজেও কখনও শুনিনি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। জানুয়ারি ২০২০ থেকে ডিসেম্বর ২০২৬ মেয়াদের প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ১৬ লাখ টাকা। ওই সরকারের আমলেই প্রকল্প এক দফা সংশোধন করা হয়। ওই সময় প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ১৭ হাজার ৮০৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা করা হয়।
সর্বশেষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সোমবার দ্বিতীয় সংশোধনী আকারে প্রকল্পটি নতুন করে অনুমোদন দিল। সংশোধিত প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ ১৭ হাজার ৯৬৯ কোটি ৫৮ লাখ। সরকারি অর্থায়ন ৩ হাজার ৬৫৫ কোটি ৬২ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ২ হাজার ৮৬৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।
আরও পড়ুন-
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে ভিড়েছে প্রথম জাহাজ
করোনাকাল কাটিয়ে আবার শুরু হয়েছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজ
শনিবার মাতারবাড়ি সমুদ্রবন্দরের টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী