৫ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপ এবং মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে দেশে বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। উজানেও ভারী বৃষ্টি হওয়ায় দেশের বেশিরভাগ নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পাঁচ নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে উঠেছে। আরও বেশ কিছু নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ওঠার শঙ্কা প্রকাশ করেছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। আগামী বুধবার (৩ জুলাই) পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে আরও বেশ কিছু এলাকায় নতুন করে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণকেন্দ্র জানায়, দেশের ৫টি নদীর ৬ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপরে অবস্থান করছে। এর মধ্যে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার, সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৩০, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৩, যদুকাটা নদীর লরেরগড় পয়েন্টে ৯৬, সোমেশ্বরী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর মারকুলি পয়েন্টে পানি আজ (সোমবার) ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে।  রবিবার (৩০ জুন) একমাত্র মারকুলি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ওপরে ছিল। 

কেন্দ্র জানায়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে কুশিয়ারা ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

আবহাওয়া সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। ফলে, এ সময়ে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীগুলোর পানি সময় বিশেষে দ্রুত বাড়তে পারে।

আগামী ৪৮ ঘণ্টায় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করে সংশ্লিষ্ট নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। একইসঙ্গে আগামী ৭২ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কয়েকটি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট, সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার কয়েকটি নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হতে পারে।

গত ২৪ ঘণ্টায় কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে সুনামগঞ্জের লরেরগড় পয়েন্টে ২৩৭ মিলিমিটার। আর সর্বনিম্ন বৃষ্টি হয়েছে সিলেটের লাটুতে ৫০ মিলিমিটার। এছাড়া উজানে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে চেরাপুঞ্জিতে ৩১৩ মিলিমিটার,  আর সর্বনিম্ন বৃষ্টি হয়েছে আগরতলায় ৪২ মিলিমিটার।

আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, সাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপের সঙ্গে মৌসুমি বায়ু মিশে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে দেশের ভেতরে এবং উজানে। এর প্রভাবে বুধবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। এতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির ঘটেছে। পাশাপাশি ভারী বৃষ্টির সঙ্গে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস হতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানায় আবহাওয়া অধিদফতর।