৭০ লাখের মারুফুল আরও আত্মবিশ্বাসী

মারুফুল হকএকসময় নেপথ্যের নায়কেরা থাকতেন অবহেলিত। মাঠে দাপিয়ে বেড়ানো ফুটবলাররাই বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক পেতেন। কিন্তু গত কয়েক বছরের ছবিটা একটু একটু করে বদলাতে শুরু করেছে। এখন ফুটবলারের পাশপাশি একজন কোচও মূল্যায়িত হচ্ছেন। আর ডাগআউটে আগের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছে তাদের।

তেমনই একজন মারুফুল হক। বাংলাদেশের একমাত্র উয়েফা ‘এ’ লাইসেন্সধারী কোচ তিনি। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের কোচিংয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া এসেছে তার মাধ্যমে। সেই মারুফুল হক এবার স্থানীয় কোচদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। এবার রেকর্ড ৭০ লাখ টাকায় চট্টগ্রাম আবাহনীকে নিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ জিততে মাঠে নেমেছেন।

বাংলাদেশের ফুটবলে বিদেশি কোচদের সঙ্গে সমান তালে লড়াই করে যাওয়া মানুষটি এখন অন্য কোচদের কাছেও ‘আইডল ’।  দেশি কোচদের যে মূল্যায়ন হতে পারে,সেটা তিনিই একটু একটু করে সবাইকে দেখিয়ে দিচ্ছেন।

তারই দেখানো পথে এখন সাইফুল বারী টিটু-জুলফিকার মাহমুদ মিন্টুরা বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক পাচ্ছেন। তাদের কারও কারও পারিশ্রমিক অর্ধকোটি টাকা! এছাড়া গোলাম জিলানিসহ অন্যরাও কম পাচ্ছেন না।

কোচদের এমন মূল্যায়নে মারুফুল হক বেশ খুশি, ‘একজন কোচ নেপথ্যে দলের হয়ে কাজ করেন। দল ভালো করলে কোচেরও সুনাম বাড়ে।  সেক্ষেত্রে বলতে পারেন মেধা-পরিশ্রমই একজন কোচকে সঠিক জায়গায় নিয়ে আসে। আমার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। আমি সবসময় দলকে কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায় সেই চেষ্টাটাই করে থাকি। হয়তো আমার সেই পরিশ্রমই আমাকে আজ এখানে  নিয়ে এসেছে। এজন্যই হয়তো বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক পাচ্ছি।’

মারুফুল মনে করেন এই জায়গাটা ধরে রাখাটাও চ্যালেঞ্জের, ‘বড় অঙ্কের পারিশ্রমিকের পাশাপাশি নিজের জায়গাটা ধরে রাখাটাও বড় কঠিন। আপনি কোচিংয়ে নতুন কী দিতে পারছেন সেটাও দেখার আছে।  দল ভালো করলে তখন কোচের নামও চলে আসে।’

বড় অঙ্কের পারিশ্রমিক, তবে তা বিদেশি কোচদের সমপর্যায়ে আসেনি। মারুফ বলছেন, ‘বিদেশি কোচরা আরও বেশি পারিশ্রমিক পাচ্ছে। আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। তবে দেশি কোচরা সাফল্য পেতে থাকলে একদিন হয়তো ওভাবেই মূল্যায়ন হবে।  একসময় তো কোচদের শুধু যাতায়াত ভাতা দেওয়া হতো।  সেই জায়গায় এখন পরিবর্তন এসেছে।’

বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজন, আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোসসহ অন্যদের পাশাপাশি ডাগআউটে ট্যাকটিকাল লড়াইও করতে হচ্ছে মারুফ-টিটুদের। দেশে প্রথমবারের মতো জিপিএস সিস্টেম এনে মারুফুল হক কোচিংকে সমৃদ্ধ করেছেন। এখানেই থেমে থাকতে চাইছেন না তিনি, ‘আমি সবসময় চেষ্টা করে থাকি যেন খেলোয়াড়েরা আধুনিক শিক্ষা পেয়ে থাকে। ক্লাব সহযোগিতা না করলে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করাটা কঠিন হয়ে যেতো।  একজন কোচ যখন ক্লাবের কাছে মুল্যায়ন পাবে, তখন খেলোয়াড়েরাও তাকে সেভাবে সমীহ করবে। আমি মনে করি খেলোয়াড়দের পাশাপাশি প্রতিটি কোচকে সঠিক মূল্যায়ন করা উচিত।  এতে করে ক্লাবই লাভবান হবে।’