চট্টগ্রাম টেস্ট, দ্বিতীয় দিন

৬৪ রানের লিড নিয়ে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ

দ্বিতীয় টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৮৭ ওভারে ২৯১/৭ (তাইজুল ৫*, মিরাজ ১৬*; এনামুল ৩৯, মুমিনুল ৩৩, সাদমান ১২০, শান্ত ২৩, জাকের ৫, মুশফিক ৪০, নাঈম ৩), লিড ৬৪ রান। 

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ৯০.১ ওভারে ২২৭/১০( সিগা ১৮*: বেনেট ২১, কারান ২১, আরভিন ৫, উইলিয়ামস ৬৭, মাধেভেরে ১৫, মাসাকাদজা ৬, এনগারাভা ০, মাসেকেসা ৮, ওয়েলচ ৫৪,মুজারাবানি ২)

জিম্বাবুয়েকে ২২৭ রানে অল্আউট করার পর বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে তাদেরকে দারুণ জবাব দিলো। সাদমান ইসলামের সেঞ্চুরিতে ভালো শুরু করে তারা। তার সঙ্গে এনামুল হক বিজয়ের ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি ছিল স্বস্তিদায়ক। টপ অর্ডারে মুমিনুল হক ও মিডলে মুশফিকুর রহিম কার্যকরী অবদান রাখেন।

সাদমান ১৮১ বলে ১৬ চার ও ১ ছয়ে ১২০ রান করেন। মুশফিক করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান। বিজয় ৩৯ ও মুমিনুল ৩৩ রান করেন।

৩ উইকেটে ২০৫ রানে চা বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ শেষ সেশনে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়, শুরুটা হয় নাজমুল হোসেন শান্তকে (২৩) দিয়ে। ২৫৯ থেকে ২৭৯ রানে চার উইকেট হারায় বিকালের সেশনে। ৭ উইকেটে ২৯১ রানে দিনের খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। তাদের লিড ৬৪ রানের। 

নাঈমের বিদায়ে পড়লো সপ্তম উইকেট

শেষ বিকালে ভেঙে পড়েছে বাংলাদেশের প্রতিরোধ। লেগ স্পিনার মাসেকেসার তৃতীয় শিকার হয়েছেন নতুন নামা নাঈম। মাসেকেসার ফ্লাইটেড ডেলিভারি তার ব্যাটের কানায় লেগে জমা পড়ে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা উইলিয়ামসের হাতে। নাঈম ২৩ বলে ৩ রানে ফেরায় বাংলাদেশ হারিয়েছে সপ্তম উইকেট।  

মুশফিকের রানআউটে পড়লো ষষ্ঠ উইকেট, চাপে বাংলাদেশ

শেষ বিকালে এসে ইনিংসের নিয়ন্ত্রণ হারাতে বসেছে বাংলাদেশ। দ্রুত সময়ে নাজমুল শান্ত, জাকের আলীর পর এবার রানআউটে কাটা পড়েছেন মুশফিকুর রহিম। তাতে চাপে পড়েছে স্বাগতিক দল। দারুণ খেলতে থাকা এই ব্যাটার দ্রুত ১ রান নিতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন। তাতে ৪০ রানে ফিরেছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।  

দ্রুত ফিরলেন জাকের

শান্ত আউট হতেই দুর্বল হতে শুরু করেছে বাংলাদেশের প্রতিরোধ। ৭৪.২ ওভারে মাসেকেসার বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন নতুন নামান জাকের আলী। ১৩ বলে ৫ রানে ফিরেছেন তিনি। তাতে ২৬৭ রানে পড়েছে পঞ্চম উইকেট। 

৬৫ রানের জুটি ভাঙলো শান্তর বিদায়ে

চায়ের বিরতির আগে জোড়া ধাক্কায় ফিরেছেন মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম। সেই ধাক্কা সামলে জুটি গড়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম ও নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের ব্যাটেই বাংলাদেশ লিড নিতে পেরেছিল। ৬৫ রানের সেই জুটি ভেঙেছে শান্তর বিদায়ে। অভিষিক্ত লেগ স্পিনার মাসেকেসার ঘূর্ণিতে আলগা শট খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সম্ভাবনা জাগিয়েও মিড উইকেটে ২৩ রানে ক্যাচ আউট হয়েছেন তিনি। তার ক্যাচ নেন ওয়েলচ।    

মুমিনুল, সাদমানকে হারিয়ে চায়ের বিরতিতে বাংলাদেশ

প্রথম সেশনে কোনও উইকেটই পড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। দারুণ ব্যাটিংয়ে প্রতিরোধ গড়ে খেলেছে। দ্বিতীয় সেশনে অবশ্য সেই ছন্দটা ধরে রাখতে পারেনি। হারিয়েছে ৩টি উইকেট। 

লাঞ্চ বিরতি থেকে ফিরে এনামুল হকের বিদায়ে ওপেনিং জুটি ভাঙার পর প্রতিরোধ গড়েছিলেন মুমিনুল হক ও সাদমান ইসলাম। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৬ রানের জুটিতে ইনিংসের নিয়ন্ত্রণও নেন তারা। কিন্তু দ্বিতীয় সেশনের শেষভাগে ৫৩.৬ ওভারে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ঘূর্ণিতে শট খেলতে গিয়ে সম্ভাবনাময় জুটির ইতি টেনে আনেন মুমিনুল। স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিডউইকেটে ৩৩ রানে কারানের হাতে তালুবন্দি হয়েছেন। তার আউটের পরের ওভারে বেন কারানের প্রথম বলে লেগ বিফোরে কাটা পড়েন সেঞ্চুরিয়ান সাদমান ইসলামও। তাতে পর পর দুই বলে দুটি উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহের পথে ধাক্কা খেয়েছে স্বাগতিক দল। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া সাদমানের ১৮১ বলে করা ১২০ রানের ইনিংসে ছিল ১৬টি চার ও ১টি ছয়।    

চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ২০৫ রান। ক্রিজে আছেন নাজমুল হোসেন শান্ত (২) ও মুশফিকুর রহিম (৯)। স্বাগতিকরা এখনও ২২ রানে পিছিয়ে। 

বাউন্ডারিতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নিলেন সাদমান

চট্টগ্রামে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে প্রতিরোধ গড়ে খেলছিলেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। প্রথম টেস্টে হাসেনি তার ব্যাট। তবে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ধৈর্য পরীক্ষার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এনামুলের সঙ্গে ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙার পর মুমিনুলকে সঙ্গে নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন। তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। বাউন্ডারি মেরে ১৪২ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেছেন সাদমান। তাতে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে ব্যবধানও কমে আসছে দ্রুত।  

১১৮ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙলো এনামুলের বিদায়ে

প্রায় তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নেমে দারুণ কিছুর বার্তা দিচ্ছিলেন এনামুল হক বিজয়। সাদমান ইসলামের সঙ্গে লাঞ্চের আগে উপহার দেন ১০৫ রানের ওপেনিং জুটি। তাতে ৩২ ইনিংস পর সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ দেখেছে বাংলাদেশ। কিন্তু বিরতি থেকে ফিরে বেশিক্ষণ থিতু হননি এনামুল। ব্লেসিং মুজারাবানির বলে এলবিডাব্লিউতে ৩৯ রানে কাটা পড়েছেন তিনি। তাতে ভেঙেছে ১১৮ রানের ওপেনিং জুটি। 

মুজারাবানির বলের লাইন বুঝতে পারেননি এনামুল। শুরুতে আবেদনে সাড়া দিয়েই আঙুল তুলেছেন আম্পায়ার। এনামুল রিভিউ নিলেও লাভ হয়নি। 

১০৫ রানের উদ্বোধনী জুটিতে লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশ

জিম্বাবুয়েকে ২২৭ রানে অলআউট করে দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনের পুরোটাই কর্তৃত্ব করেছেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও এনামুল হক। সাদমান ছিলেন তুলনায় বেশি আক্রমণাত্মক। তুলে নিয়েছেন ষষ্ঠ হাফসেঞ্চুরি। অপরাজিত আছেন ৬৬ রানে। প্রায় তিন বছর পর টেস্ট খেলতে নামা এনামুল হক কিছুটা ধীর গতিতে খেলছেন। অপরাজিত আছেন ৩৮ রানে। দুই ওপেনার অবিচ্ছিন্ন থেকে লাঞ্চ বিরতিতে গেছেন। ফলে ৩২ ইনিংস পর সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ দেখেছে বাংলাদেশ। ২০২২ সালে চট্টগ্রামে ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পার্টনারশিপ করেছিলেন  নাজমুল হোসেন শান্ত-জাকির হাসান। তারা তুলেছিলেন ১২৪। 

প্রথম সেশন শেষে স্বাগতিকদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ১০৫ রান। তারা এখনও পিছিয়ে ১২২ রানে।  

৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। দিনের শুরুতে তাইজুলের আঘাতে ২২৭ রানে থামলো জিম্বাবুয়ে

চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন দুই সেশনে দারুণ ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। যার পেছনে ছিলেন নিক ওয়েলচ (৫৪) ও শন উইলিয়ামস (৬৭)। হাফসেঞ্চুরি পেয়েছিলেন দুজনেই। চায়ের বিরতির পর ওয়েলচ রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে সাজঘরে ফিরতেই মোমেন্টাম বদলে দেন নাঈম হাসান ও তাইজুল ইসলাম। শেষ সেশনে তাদের ঘূর্ণি জাদুতে নামে ব্যাটিং ধস। জিম্বাবুয়ের ৭ উইকেট তুলে ম্যাচের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নেয় তারা। 

৯ উইকেটে ২২৭ রানে প্রথম দিন শেষ করা জিম্বাবুয়েকে দ্বিতীয় দিন আর দাঁড়াতে দেয়নি বাংলাদেশ। প্রথম বলেই তাইজুল ইসলামের শিকারে পরিণত হন ব্লেসিং মুজারাবানি (২)। তাতে ২২৭ রানে থেমেছে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। 

জিম্বাবুয়ে ইনিংসে ধস নামানোর মঞ্চটা গড়ে দেন নাঈম। ক্রেইগ আরভিন (৫) ও ভোগাতে থাকা শন উইলিয়ামসকে (৬৭) ফিরিয়ে মোমেন্টাম পাইয়ে দেন তিনি। তার পর জিম্বাবুয়ের ব্যাটিংয়ের লেজ উন্মুক্ত করে দেন তাইজুল। শেষ পর্যন্ত ৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়েছেন এই বামহাতি স্পিনার। ৪২ রানে দুটি নিয়েছেন অফস্পিনার নাইম। একটি নিয়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।