ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গিয়ে গোড়ালির পুরানো ইনজুরি নতুন করে জেগে ওঠে তাসকিনের। তারপরও ইনজুরি সামলে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলেন। কিন্তু অস্বস্তি বেড়ে যাওয়াতে ঢাকা লিগের সব ম্যাচ খেলেননি তিনি। তিনটি ম্যাচ খেলে ফের বিশ্রামে পাঠানো হয় তাসকিনকে। দুই সপ্তাহের পুরো বিশ্রাম শেষ করে গত তিনদিন ধরে অল্প রানআপে, স্বল্প গতিতে বোলিং করেছেন তাসকিন। আজ রাতের ফ্লাইটে যাচ্ছেন ইংল্যান্ডে। সেখানে যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর জেমস ক্যাল্ডার বাংলাদেশের এই পেসারকে পর্যবেক্ষণ করবেন। তারপরই আসলে তার অবস্থা পুরোপুরিভাবে বলা যাবে।
রবিবার বিকালে বিমানবন্দরে যেতে যেতে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপ হয় তাসকিনের। এই আলাপেই তিনি নিজের বর্তমান অবস্থাসহ ইংল্যান্ডের চিকিৎসা প্রক্রিয়ার ব্যাপারে কথা বলেন। তাসকিন বলেছেন, ‘পায়ে চাপ পড়লেই ব্যথা হতো বিষয়টি তেমন নয়। এটা শুরু হয়েছে প্রথম ওয়েস্ট ইন্ডিজে। এটা নিয়েই খেলছিলাম। খেলতে খেলতে বিপিএলের শেষের দিকে একটু বেশি বেড়ে যায়। তারপর কিছুদিন বিশ্রাম নিয়ে ঢাকা লিগে তিনটি ম্যাচ খেলি। দেখলাম ব্যথার মাত্রাটা বেশি, এফোর্ট দিতে কষ্ট হচ্ছিল। বোর্ডকে জানালে তারা বিশ্রাম দিয়ে রিহ্যাব করিয়ে এখন ইল্যান্ডে পাঠাচ্ছে। সামনে যেহেতু অনেক খেলা আছে, তাই আমাকে দ্রুত সুস্থ হতে হবে। মূলত নিয়মিত খেলার কারণে ব্যথাটা একটু বেড়ে যায়। বেশ কিছুদিন ধরে একটু অসুবিধা হচ্ছিল।’
ঢাকা লিগে তিনটি ম্যাচ খেলার পর ব্যথা অনুভব করেন তাসকিন। এরপর বিসিবির মেডিকেল বিভাগ তাকে বিশ্রামে পাঠায়। দুই সপ্তাহ বিশ্রাম শেষ করে তাসকিন এখন ইংল্যান্ডে যাচ্ছেন, ‘লিগে তিন ম্যাচ খেলার পর আমি তো রিহ্যাব চালিয়ে যাচ্ছি। মূলত এখন যাচ্ছি দেখাতে কিীঅবস্থায় আছি। তিনি একজন বড় মাপের সার্জন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অনেক ফুটবলারকে দেখেন তিনি। ওনার সাথে দেখা হবে ২৯ তারিখে। বোর্ড সবকিছু ব্যবস্থা করে দিয়েছে। বোর্ডকে অনেক ধন্যবাদ।’
সার্জারির প্রয়োজন হবে কিনা জানতে চাইলে তাসকিন বলেছেন, ‘সার্জারির চান্স থাকে, যদি খুব বড় কিছু হয়। বড় কিছু না, আশা করছি সবাই। পরশু দিন দেখার পর ওনার পরামর্শ নিলে আমরা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারবো।’
রিহ্যাব প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিনদিন রানআপ কমিয়ে কম গতিতে বেশ কয়েক ওভার বোলিং করেন তাসকিন। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘চার-পাঁচ কদম দিয়ে কালকেই (শনিবার) বোলিং করেছি। এর আগেও দুই দিন শর্ট রানআপে বোলিং করেছি। রানিং করছি। তার আগে দুই সপ্তাহ পুরোপুরি বিশ্রাম নিয়েছি।’
বোলিংয়ে কেমন অনুভব করেছেন সেই প্রসঙ্গেও তাসকিন বললেন, ‘আল্লাহর রহমতে ভালো। বিশ্রাম নেওয়ার পর আসলে কিছুই মনে হয় না। রিহ্যাবের মধ্যে ছিলাম, সমস্যা আছে কিনা টের পাচ্ছি না। তবে ২৯ তারিখে ডাক্তার দেখানোর পর আসলে বুঝতে পারবো। যদি বলে কোনও সমস্যা নাই, সব ঠিক আছে। তাহলে তো আর কথাই নেই।’
পেসারদের ইনজুরি নিয়েই দিনের পর দিন কাটাতে হয়। সাবেক অধিনায়ক মাশরাফির ক্ষেত্রেও তেমনটা দেখা গেছে। ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ সময়ই ইনজুরি নিয়ে খেলেছেন তিনি। তাসকিনও এর ব্যতিক্রম নন। যখনই ভালো সময় কাটান, তখনই কোনও না কোনও ইনজুরি এসে হানা দেয়। হুট করেই আসা এই ইনজুরিতে ক্যারিয়ার আবার পিছিয়ে পড়ে পেসারদের। তাসকিনের পুরানো একটি ইনজুরি ছিল। কাঁধ এবং পিঠের ব্যথা নিয়ে দীর্ঘদিন ভুগেছেন তিনি। এখন কোনও সমস্যা আছে কিনা জানতে চাইলে তাসকিন বলেছেন, ‘কাঁধ, পিঠের ইনজুরি নেই আল্লাহর রহমতে। আসলে সমস্যা তো সারা শরীরে (হাসি)। তবে সমস্যা এখন আসলে গোড়ালিতেই।’