তামিমদের প্রতিবাদের মুখে হৃদয়ের শাস্তি পেছালো বিসিবি

গত ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে আম্পায়ারের একটি সিদ্ধান্তে নাখোশ হয়ে খেলা বন্ধ করে আগ্রাসী মেজাজ দেখান মোহামেডান অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়। আচরণবিধি ভঙ্গ করায় এক ম্যাচ নিষিদ্ধ হন। পরে গণমাধ্যমের সামনে এসেও আম্পায়ারদের সমালোচনা করায় শাস্তি বাড়িয়ে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ করা হয় তাকে। এক ম্যাচ বাইরে থাকার পর মোহামেডানের এই ব্যাটারকে নিয়ম ভেঙে শাস্তি কমিয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলার সুযোগ দেয় বিসিবি। ওই ঘটনায় সিসিডিএমের টেকনিক্যাল কমিটি থেকে সরে দাঁড়ান এনামুল হক মনি। নতুন আহ্বায়ক হিসেবে এসে নাজমুল আবেদীন ফাহিম আগের শাস্তি দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখেন। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই এই সিদ্ধান্ত বদলে গেলো।

হৃদয়ের শাস্তির বিরোধিতা করে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে মোহামেডানের ক্রিকেটাররা শুক্রবার মিরপুরে বিসিবি কার্যালয়ে এসে বোর্ডের প্রধান ফারুক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তারা প্রতিবাদ জানান। রাত গড়াতেই চাপের মুখে শাস্তির ধরনে পরিবর্তন আনলো দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিসিবি জানায়, হৃদয়ের বাকি এক ম্যাচের শাস্তি এক বছর পেছানো হয়েছে। মানে তিনি ওই নিষেধাজ্ঞা ভোগ করবেন প্রিমিয়ার লিগের পরবর্তী আসরের প্রথম ম্যাচে। নতুন এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলমান সুপার লিগে মোহামেডানের বাকি দুই ম্যাচেই খেলতে পারবেন হৃদয়। আগামীকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে মাঠে দেখা যাবে তাকে।

বোর্ড প্রধানের সঙ্গে আলাপ শেষে বেরিয়ে তামিম বলেছেন, ‘তাওহীদ হৃদয়ের ইস্যুটা। ওর সঙ্গে মাঠে একটা ঘটনা হয়। ওকে দুই ম্যাচের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তখন কিন্তু কোনও খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলেনি। আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি, সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কিন্তু কেউ কোনও কথা বলিনি। তার কিছু দিন পর দেখলাম যে (নিষেধাজ্ঞা) দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে। তখনও আমরা কেউ কোনও কথা বলিনি। তারপর হৃদয় একটা ম্যাচ না খেলে পরের দুটো ম্যাচ খেললো। স্বাভাবিকভাবে ওর যে শাস্তি ছিল (এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা), সেটা সে ভোগ করে নিয়েছে। এখন দুটি ম্যাচ খেলার পর কালকে শুনলাম যে তাকে আবার নিষিদ্ধ করেছে।’

কোন নিয়মে এটা করা হলো, সেটা বোধগম্য নয় তামিমের কাছে, ‘এটা কোন রুলে, কীভাবে করেছে এটা আমার জানা নেই। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। এটা হাস্যকর ছিল। কোনোভাবে সে নিষিদ্ধ হতে পারে না যে কিনা ইতোমধ্যে (একবার) নিষিদ্ধ হয়েছে। তাকে বিসিবি দুটি ম্যাচে খেলতে দিয়েছে, তাকে আবার আপনি কীভাবে নিষিদ্ধ করতে পারেন? এটা আমাদের একটা বড় পয়েন্ট ছিল।’

মোহামেডান থেকে চাপ দিয়ে খেলানো হয়েছে হৃদয়কে, এমন গুঞ্জন নিয়ে তামিম বললেন, ‘মোহামেডান থেকে চাপ দিয়ে খেলানো হয়েছে কি হয়নি সেটা জরুরি না। তাকে কি বিসিবি খেলার অনুমতি দিয়েছে! যদি দেয় তাহলে আবার একই ব্যাপারে কীভাবে শাস্তি দেন। এটা নিয়ে আমাদের বিতর্ক হয়েছে উনাদের সঙ্গে, আমরা সুন্দর করে অবস্থান পরিষ্কার করেছি, আমাদের অনুভূতি। তারপর উনারা উনাদের মতো সিদ্ধান্ত দেবেন।’