তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তির ঘটনাকে কেন্দ্র করে টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক মনি পদত্যাগ করেছেন। তার জায়গায় নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিসিবির পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে। বুধবার বিকালে আম্পায়ার্স কমিটির একটি সভা অনুষ্ঠিত হয় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও শাস্তি কমিয়ে এক ম্যাচ করা হয়েছে। এই নিয়েই পরিস্থিতি ঘোলাটে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হৃদয়কে আরও একটি ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকতে হবে। সভা শেষে গণমাধ্যমকে বিষয়গুলো নিশ্চিত করেন আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু।
ফাহিমের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মিঠু গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘নতুন করে সিসিডিএম নাজমুল আবেদীন ফাহিমকে টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে নিযুক্ত করেছে। তিনিই এই মুহূর্তে কমিটির কাজগুলোকে এগিয়ে নিযে যাবেন।’
হৃদয়ের শাস্তির ব্যাপারে আপিল করেছিল মোহামেডান। তবে সিসিডিএম টেকনিক্যাল কমিটি তার ওপর ধার্য করা দুই ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কমাতে আগ্রহী ছিল না। তাদেরকে ডিঙিয়ে বিসিবি ও আম্পায়ার্স কমিটির একক সিদ্ধান্তে তার শাস্তি কমানো হয়, বদলে ফেলা হয় নিয়মও। টেকনিক্যাল কমিটির দুই সদস্য এনামুল হক মনি ও নিয়ামুর রশিদ রাহুল কেউই জানতেন না শাস্তি কমানোর বিষয়টি। এর জেরে মনি টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
যদিও মনির পদত্যাগ নিয়ে বিসিবির আম্পায়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান ও টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য হিসেবে মিঠু সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘হৃদয় এক ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ ছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে খেলেছেন। বিষয়টি মূলত টেকনিক্যাল কমিটির দায়িত্বে ছিল। টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক আগে থেকেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত ছিলেন এবং এটিকে স্বার্থের সংঘাত হিসেবে দেখায় পদত্যাগ করেন। এই শূন্যতার মধ্যেই পুরো পরিস্থিতি ঘটেছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘ঘটনাগুলোর যথাযথ দেখভালের দায়িত্ব ছিল টেকনিক্যাল কমিটির। সেই দায়িত্ব বাস্তবায়নের অভাবে কিছু বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। এজন্য আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) একটি সভা ডেকে টেকনিক্যাল কমিটির নতুন আহ্বায়ক নিয়োগ দিয়েছি। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর বিগত কয়েকদিনের ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করবেন কোনটি সঠিক হয়েছে, কোনটি ভুল হয়েছে এবং কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এরপরই আমরা পরবর্তী পদক্ষেপে যাবো।’
মিঠু স্পষ্ট করেন, ‘এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র টেকনিক্যাল কমিটির। এটি আম্পায়ার্স কমিটির না, আবার সিসিডিএমেরও না। টেকনিক্যাল কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কেবল সিসিডিএমকে জানাবে- অপরাধ যা-ই হোক, সেটা শাস্তি হোক বা জরিমানা।’
নিয়ম পাল্টে হৃদয়ের শাস্তি কমানো হয়। যদিও নতুন আহ্বায়ক দায়িত্ব নিয়ে বিষয়টি নিয়ে সভা করবেন। এরপর সিদ্ধান্ত হবে তার নতুন করে শাস্তি হবে কিনা? এ প্রসঙ্গে মিঠু বলেছেন, ‘হ্যাঁ, এটা দুই একদিনের মধ্যেই দেখবেন পরিবর্তন আসতেও পারে। আজকে দেওয়া হয়েছে কাল পরশু মিটিং করে শনিবার আমরা ওই সিদ্ধান্তের পরিবর্তন দেখতে পারবেন।’
এদিকে গত ১৯ এপ্রিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ার্স বিভাগে আয়োজিত এক অভ্যন্তরীণ সভায় ম্যাচ রেফারিদের মাঝে দ্বন্দ্বের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় আম্পায়ারিং বিভাগে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে দুটি গ্রুপ মুখোমুখি অবস্থান করছেন। বৈঠকের পরপরই একটি পক্ষ বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও),আম্পায়ার্স ও ম্যাচ অফিসিয়াল বিভাগের চেয়ারম্যান মিঠু বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন।
এই ব্যাপারে মিঠু গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা দুই ম্যাচ রেফারির অভিযোগগুলো সামনের বোর্ড সভায় তুলবো। সব ম্যাচ রেফারিরা একটি চিঠি দিয়েছে। একটা দেবব্রত পাল ম্যাচ রেফারি হিসাবে দিয়েছে। আমরা আম্পায়ার্স বিভাগ সামনের বোর্ড সভায় পাঠিয়ে দিবো। এখন যে পরিস্থিতি হয়েছে এমন যেন ভবিষ্যতে যেন না হয়। আমরা পরে বোর্ড পরিচালকরা সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিবো কী করা যাবে এই বিষয়টাতে।’