শুরুর জুটিতেই জিম্বাবুয়ের ৫০

সংক্ষিপ্ত স্কোর: জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংসে ১১ ওভারে ৫৯/০ (বেনেট ৩৩*, কারান ১৬*)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৬১ ওভারে ১৯১/১০ (খালেদ ০*; সাদমান ১২, জয় ১৪, শান্ত ৪০, মুশফিক ৪, মুমিনুল ৫৬, মিরাজ ১, তাইজুল ৩, হাসান ১৯, জাকের ২৮, নাহিদ ০)

১৯১ রানে বাংলাদেশকে থামিয়েছে জিম্বাবুয়ে

চায়ের বিরতির পর দেখার ছিল স্বীকৃত ব্যাটার জাকের আলী ও পেসার হাসান মাহমুদ মিলে কতক্ষণ টেনে নিতে পারেন। অষ্টম উইকেট জুটিতে বেশ ভালোই টেনে নেন তারা। ৪১ রান যোগ করে দলকে দুইশ পার করানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। হাসান মাহমুদকে ১৯ রানে বোল্ড করে সেই স্বপ্নের ইতি ঘটান মুজারাবানি। তার পর মাধেভেরের ঘূর্ণিতে জাকের আলীও ২৮ রানে আউট হলে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতে সময় লাগেনি। একই ওভারে নাহিদ রানা বোল্ড হলে প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানে থামে বাংলাদেশ। 

জিম্বাবুয়ের হয়ে ২১ রানে তিনটি উইকেট নিয়ে মূল সর্বনাশটা করেছেন বামহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। ৫০ রানে তিনটি নেন পেসার ব্লেসিং মুজারাবানিও। তাছাড়া দুটি করে উইকেট নেন আরেক পেসার ভিক্টর নিয়াউচি ও অফস্পিনার ওয়েসলি মাধেভেরে।   

দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের ৫ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের দাপট

ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ঘূর্ণি ধস নামিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে। তাতে দেড়শর আগেই সাত উইকেট পড়েছে স্বাগতিকদের। চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৭ উইকেটে ১৫৪। 

দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুর ধাক্কার পর ইনিংসটা দিশা পেয়েছিল নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের ব্যাটিংয়ে। ৬৬ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। দ্বিতীয় সেশনে ৬৬ রানের এই জুটি ভাঙতেই ধস নামে ইনিংসে। শান্ত দলীয় ৯৮ রানে ফেরার পর ১৪ রানের ব্যবধানে পড়েছে ৩ উইকেট! অযথা শট খেলে বিদায় নেন মুশফিক, মুমিনুল ও মিরাজ। সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারেনি স্বাগতিক দল।

এই সেশনে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ঘূর্ণিই প্রভাবক হয়ে উঠে। তার তৃতীয় উইকেট শিকারে চায়ের বিরতিতে যাওয়ার আগেই সপ্তম উইকেট হিসেবে ফিরেছেন তাইজুল।

এখন স্বীকৃত ব্যাটার হিসেবে রয়েছেন শুধু জাকের আলী। সঙ্গে রয়েছেন পেসার হাসান মাহমুদ। 

দ্বিতীয় সেশনে জিম্বাবুয়ে বল হাতে দাপট দেখিয়েছে। ২৬ ওভারে ৭০ রানের বিনিময়ে নিয়েছে ৫ উইকেট। ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ৩ উইকেটের সঙ্গে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিক্টর নিয়াউচি।     

দ্রুত ৩ উইকেট পতনে ভীষণ বিপদে বাংলাদেশ

সেট ব্যাটার মুমিনুলের আউটই কাল হয়েছে বাংলাদেশের। ১ রানের ব্যবধানে ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজও। তাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে তিন উইকেট পতনে ভীষণ বিপদে পড়েছে স্বাগতিক দল। দলের ১৩৭ রানে মুজারাবানির শর্ট বলে গ্লাভসবন্দি হয়েছেন মিরাজ। তাতে পড়েছে ষষ্ঠ উইকেট। 

মুশফিকের পর হাফসেঞ্চুরিয়ান ‍মুমিনুলকে ফেরালেন মাসাকাদজা 

ওয়েলিংটন মাসাকাদজার ঘূর্ণিতে অযথা শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন মুশফিক। একই স্পিনারকে পাত্তা না দিয়ে ৫৬ রানে কাটা পড়েছেন মুমিনুল হকও। মাসাকাদজার ভাসানো বলে আগে থেকে নির্ধারিত স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।  মুুমিনুলের ১০৫ বলের ইনিংসে ছিল ৮টি চার ও ১টি ছয়।     

মেরে খেলতে গিয়ে ৪ রানে আউট মুশফিক

শান্তর আউটের পর খুব বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি মুশফিক। থাকতে পারেননি বললে ভুল হবে। নিজেই বোধহয় থাকতে চাননি। বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজার শর্ট বল মেরে খেলতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। যখন জুটি গড়া দায়িত্ব, তখন ক্যাচ তুলে ৪ রানে ফিরেছেন তিনি। 

শান্তর আউটে ভাঙলো ৬৬ রানের জুটি

৩২ রানে দুই উইকেট পতনের পর নাজমুল হোসেন শান্ত-মুমিনুল হকের দৃঢ়তায় ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। লাঞ্চের পরও এগিয়ে যেতে থাকে জুটি। দু’জনের মধ্যে মূলত শান্তই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে খেলে যাচ্ছিলেন। ৩১.৫ ওভারে এসে তাকে শর্ট বল দিয়ে কাবু করেছেন মুজারাবানি। তাতে ভেঙেছে ৬৬ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।  

শর্ট বল দিয়ে প্রলুব্ধ করছিলেন জিম্বাবুয়ে পেসার মুজারাবানি। শান্ত সেই ফাঁদে পা দিয়ে মেরে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়েছেন। ফেরার আগে ৬৯ বলে ৪০ রানে ফিরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তাতে ছিল ৬টি চার।   

বৃষ্টির বাগড়ার পর শুরু হয়েছে খেলা

লাঞ্চ বিরতির পর বৃষ্টির কারণে আধা ঘণ্টার মতো দেরিতে শুরু হয়েছে খেলা। 

বৃষ্টিতে দ্বিতীয় সেশন শুরু হতে দেরি

সারা দেশেই রয়েছে বৃষ্টির আভাস। যার প্রভাব রয়েছে সিলেটেও। সকাল থেকে ছিল মেঘের আনাগোনা। লাঞ্চ বিরতির সময়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে দ্বিতীয় সেশনের খেলা শুরু হতে দেরি হচ্ছে।  

শুরুর ধাক্কার পর মুমিনুল-শান্তর দৃঢ়তায় শেষ প্রথম সেশন

প্রথম টেস্টে প্রথম দিনের প্রথম সেশনের শুরুর ঘণ্টা যদি হয় জিম্বাবুয়ের। তাহলে শেষ ঘণ্টাটা বলতে হবে বাংলাদেশের। শুরুর ঘণ্টায় ভিক্টর নিয়াউচির আঘাতে দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসানকে সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে পেরেছিল জিম্বাবুয়ে। তার পর অবশ্য তৃতীয় উইকেটে বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হকের দৃঢ়তায়। মুমিনুলের চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক ছিলেন অধিনায়ক শান্ত। তাদের ব্যাটে ভর করে লাঞ্চ বিরতিতে গেছে স্বাগতিক দল। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৮৪।

দলীয় ৩১ ও ৩২ রানে দুই ওপেনারের আউটের পর প্রথম ঘণ্টায় শূন্য রানে ফিরতে পারতেন মুমিনুল হকও। কিন্তু জিম্বাবুয়ে কিপার তার ক্যাচ নিতে পারেননি। সেই মুমিনুল ২১ রান নিয়ে লাঞ্চে গেছেন। শান্ত ব্যাট করছেন ৩০ রানে। বাংলাদেশের ইনিংসকে সঠিক দিশা দেখাতে থাকা এই জুটি এখনও অবিচ্ছিন্ন ৫২ রানে।   

জিম্বাবুয়ের ব্যর্থ রিভিউ

৩২ রানে দ্বিতীয় উইকেট পতনের পর প্রতিরোধ গড়ে খেলছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন ও মুমিনুল হক। কুড়ি ওভারে এই জুটি ভাঙতে এলবিডাব্লিউর আবেদন করেছিল জিম্বাবুয়ে। আম্পায়ার সাড়া দেয়নি অবশ্য। পরে তারা রিভিউ নিলে সেখানেও ব্যর্থ হয়েছে।      

নিয়াউচির আঘাতে ফিরেছেন দুই ওপেনার

টস জিতে শুরুতে সতর্ক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয়। ৮ ওভার পর্যন্ত কাটিয়ে দেন নির্বিঘ্নে। চতুর্থ ওভারে অবশ্য মুজারাবানির বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়েছিলেন জয়। জিম্বাবুয়ে রিভিউ নিলেও আম্পায়ার্স কলে বেঁচেছেন তিনি। তবে নবম ওভারে বোলিংয়ে পরিবর্তন আনতেই ভাঙে শুরুর জুটি। নিয়াউচির বলে গালিতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সাদমান। অফ স্টাম্পের বাইরের বল আগেভাগে স্ট্রেট ড্রাইভ করতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন তিনি। ফেরার আগে ২৩ বলে করেছেন ১২ রান। তাতে ৩১ রানে পড়ে প্রথম উইকেট।     

সাদমানের আউটের পর বেশিক্ষণ টেকেননি আরেক ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ও। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই আঘাত হানেন নিয়াউচি। জয় তার বলের লাইন বুঝতে পারেননি। ফ্রন্ট ফুটে ডিফেন্ড করতে গেলে বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় কিপারের কাছে। ফেরার আগে ৩৫ বলে ১৪ রান করেছেন জয়।  

টসের মুহূর্তের ছবি।টস জিতে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

সিলেটে বছরের প্রথম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টস জিতেছে বাংলাদেশ। টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। 

লাল বলের ক্রিকেট দুই দলের সর্বশেষ দেখা হয়েছে ২০২১ সালে। জিম্বাবুয়ের মাটিতে সেই টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছিল। বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ ২০১৮ সালে টেস্ট জিতেছিল জিম্বাবুয়ে। সেই টেস্টটি হয়েছিল সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে, সেটি ছিল আবার সিলেট ভেন্যুর প্রথম টেস্ট। 

একাদশে কারা

তিন পেসার আর দুই স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়েছে বাংলাদেশ। তিন পেসার হলেন- নাহিদ রানা, খালেদ আহমেদ ও হাসান মাহমুদ। স্পিনে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে তাইজুল ইসলাম। তাছাড়া কিপিংয়ের দায়িত্বে থাকছেন জাকের আলী। 

বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), মেহেদী হাসান মিরাজ, সাদমান ইসলাম, মাহমুদুল হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, জাকের আলী (উইকেটরক্ষক), তাইজুল ইসলাম, হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা ও খালেদ আহমেদ।

জিম্বাবুয়ে একাদশ: বেন কারান, ব্রায়ান বেনেট, নিকোলাস ওয়েলচ, শন উইলিয়ামস, ক্রেইগ আরভিন (অধিনায়ক), ওয়েসলি মাধেভেরে, নিয়াশা মায়াভো (উইকেটরক্ষক), ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, রিচার্ড এনগারাভা, ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিক্টর নিয়াউচি।