দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়েই হয়তো অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল হাসান শান্তর অধ্যায় শেষ হলো। গত কিছুদিন ধরেই আলোচনা, এই সিরিজ শেষে তিনি অধিনায়কত্ব করবেন না বলে বিসিবিকে চিঠি দিয়েছিলেন। যদিও এমন কিছু নিশ্চিত করেনি বিসিবি। বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন, শান্তর সঙ্গে তার কোনও কথা হয়নি। ম্যাচ শেষে বৃহস্পতিবার অধিনায়কও এমনটাই জানালেন। অধিনায়কত্ব ইস্যুতে বোর্ডের কাছ থেকেই খবর আসবে বলে জানালেন শান্ত।
তিন দিনেই প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শান্ত। নেতৃত্ব প্রসঙ্গ আসতেই তিনি বললেন, ‘অধিনায়কত্বের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট কথা বলেছেন আপনাদের সঙ্গে। এ ব্যাপারে এখানে আমি আর কোনও মন্তব্য না করি। হয়তো ক্রিকেট বোর্ড থেকেই একটা (খবর) পাবেন।’
অধিনায়কত্ব ছাড়া নিয়ে একদিন আগে বোর্ড সভাপতি ফারুক শান্তর সঙ্গে কথা না হওয়ার বিষয়টি জানান। শান্তও জানালেন একই কথা, ‘আমার এখনও সভাপতির সঙ্গে কথা হয়নি। কথা হলে আমি বা সভাপতি পরিষ্কার একটা বার্তা দিতে পারবো।’
প্রতিটি ম্যাচ কিংবা কোনও টুর্নামেন্টের আগে ক্রিকেটারদের অবসর কিংবা অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে বিস্তর আলোচনা হয়। এর আগে কানপুরে সাকিবের অবসর, এবার চট্টগ্রাম টেস্টের আগে শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার প্রসঙ্গ। এইসব কিছু নিশ্চিতভাবেই মাঠের ক্রিকেটকে প্রভাবিত করে। ভবিষ্যতে সবকিছু পেশাদারিত্বের মধ্য থেকে হবে বলে আশা করেন শান্ত, ‘ইনশাআল্লাহ সামনে থেকে (পেশাদারিত্বের মধ্যে থেকে) হবে আমি এটা বিশ্বাস করি। সুন্দর একটা নিয়মের মাধ্যমে এই জিনিগুলো হবে।’
অধিনায়ক হওয়ার পর শান্তর পারফরম্যান্সে ভাটা পড়েছে। নিয়মিত ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি। অনেকেই মনে করেন অধিনায়ক হওয়ার চাপ সামলাতে পারছেন না। যদিও বাংলাদেশের অধিনায়ক এমনটা মনে করেন না, ‘আমার কাছে একবারও মনে হয়নি। আজকেও যখন ব্যাট করেছি, আমার মনে হয়নি আমি অধিনায়ক। অধিনায়ক বলে সবকিছু আমার একা করতে হবে এরকম কিছু না। আমি শুধু বল দেখি আর ব্যাট করি। ব্যাটিং করতে তো সবারই ভালো লাগে। চিন্তা থাকে কীভাবে বড় রান করতে পারি।’
শান্ত আরও বলেছেন, ‘আমি এই বিষয়টা সবসময় বলে আসি, আগে থেকেই, বয়সভিত্তিক ক্রিকেট যখন খেলছি তখনও বলছি- এই জায়গাটা আমি খুবই উপভোগ করি। শেষ কয়েকটা সিরিজ যে খেলেছি, মাঠের মধ্যে অনেক উপভোগ করেছি।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হারের পরও শান্তর দাবি এতটা খারাপ দল নয় তারা, ‘এটার মানে এই না যে আমরা এতটাও খারাপ খেলবো। ১০০-১৫০ রানে অলআউট হয়ে যাবো। না হলে ভালো অবশ্যই। আমি এর আগেও বলেছি (ব্যাটিং ধস) যত কম হয় ততই ভালো।’
দুই ইনিংসে ব্যর্থ হয়েছেন শান্ত। প্রথম ইনিংসে শুরুতে বিদায় নিলেও দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ কিছুক্ষণ ব্যাটিং করেছেন। দলের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তার। ৫৫ বলে খেলেন ৩৬ রানের ইনিংস। বৃহস্পতিবার ম্যাচ শেষে নিজের ইনিংস নিয়ে শান্ত বলেছেন, ‘আমার কাছে মনে হয় আমি ব্যাটার হিসেবে যেহেতু উপরের দিকে ব্যাটিং করি, খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা ব্যাটার হিসেবে রান করা। যেটা আমার মনে হয় যে, হচ্ছে না। সবথেকে খারাপ জিনিস হচ্ছে, আমার শেষ কয়েকটা ইনিংস দেখেন, ২০ থেকে ৪০ এর মধ্যে আমি আউট হচ্ছি- সেট হওয়ার পর আমি আউট হচ্ছি। যেটা একটা দলের জন্য বেশ ক্ষতিকর। এ জায়গাটাতে আমার আরেকটু মনোযোগ দিয়ে ব্যাটিং করা উচিত।’