চট্টগ্রামে বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই

পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে ভারতে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শক্তিশালী দলের কাছে পাত্তা পায়নি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। একই পরিণতি দেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেও। মঙ্গলবার শুরু হতে যাওয়া চট্টগ্রামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে মরিয়া বাংলাদেশ দল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সকাল দশটায়। যা সরাসরি সম্প্রচার করবে টি স্পোর্টস।

গত দুই দিন চট্টগ্রামের অনুশীলনে মগ্ন বাংলাদেশ, যেখানে সবাই নিজেদের ভুল শোধরাতে কাজে ব্যস্ত। প্রতি ম্যাচেই ভুল করে ভুলগুলো শুধরানোর মিশনে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু ম্যাচে পাল্টায় না কিছুই। তবে আশা হারাচ্ছে না বাংলাদেশ। সংবাদ সম্মেলনে এসে আজ তাইজুল ইসলামও শোনালেন আশার কথাই, ‘আমাদের প্রস্তুতি ভালো হচ্ছে। অনুশীলনে সবাই খুব সিরিয়াস। আগের ম্যাচের ভুলগুলো নিয়ে কাজ করছে। এখানকার (চট্টগ্রামের) উইকেট ঢাকার চেয়ে ভিন্ন। সব বিভাগে (ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং) ভালো করতে পারলে ম্যাচ জেতা যাবে। খেয়াল করলে দেখবেন, আমাদের খেলোয়াড়রা ব্যক্তিগতভাবে প্রতি ম্যাচেই কেউ না কেউ ভালো করছে। তবে দল হিসেবে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।’

সিরিজ বাঁচাতে এবার চট্টগ্রামে ব্যাটিংয়ে উন্নতির বিকল্প নেই। ভারতে দুই টেস্ট এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকায় বাংলাদেশের হারের মূল কারণ ব্যাটিং ব্যর্থতা। চট্টগ্রামের স্পিনবান্ধব উইকেট হলেও ওখানে ব্যাটারদের জন্যও সুবিধা রয়েছে। 

সিমন্সের সঙ্গে শান্ত

তাইজুল মনে করেন চট্টগ্রামে ব্যাটারদের জন্য দারুণ সুযোগ অপেক্ষা করছে, ‘আপনি প্রত্যেকটা ম্যাচ আসা মানেই একটা সুযোগ। সেদিক থেকে আমার মনে হয় যে, আবার আরেকটা সুযোগ ব্যাটারদের কাছে আছে। সত্যি কথা বলতে কী, আমাদের দল হিসেবে যে পারফরম্যান্সটা হওয়ার কথা, সেটা হচ্ছে না। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে একেকজন একেক ম্যাচে ভালো খেলছে। টিম হিসেবে আমরা যদি দুই তিনটা জুটি গড়তে পারি, দুয়েকজন যদি হাফ সেঞ্চুরি, সেঞ্চুরি করতে পারি; তাহলে হয়তো আমাদের লক্ষ্যটা বড় হবে। সবাই হার্ডওয়ার্ক করছে, মন থেকেও চাচ্ছে। কিন্তু হচ্ছে না। হয়তো এই ম্যাচে আমরা ভালো কিছু করবো।’

এই ম্যাচের আগে ড্রেসিংরুমে কিছুটা হলেও অস্বস্তি। কেননা অধিনায়ক শান্ত বিসিবিকে জানিয়ে দিয়েছেন, এই ম্যাচ দিয়েই নেতৃত্বের ইতি টানছেন তিনি। তাইজুল অবশ্য জানালেন এসব নিয়ে দলের মধ্যে আলাপ হয়নি। পুরো দলের ফোকাস কীভাবে তার ম্যাচটি জিততে পারবে সেদিকে।

এদিকে টেস্ট শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে স্কোয়াডে পরিবর্তন এনেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ইনজুরির কারণে জাকের আলী অনিককে বাদ দিয়ে নেওয়া হয়েছে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফরম্যান্স করা এই তরুণ চলমান জাতীয় লিগের প্রথম রাউন্ডেও সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। সবমিলিয়ে তার একাদশে থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। তবে একাদশে বাড়তি একজন পেসার খেলালে হয়তো মাহিদুলের সুযোগ হবে না। এদিকে নাঈম ইসলামের বদলে হাসান মুরাদের অভিষেক হতে পারে চট্টগ্রাম টেস্টে। 

অনুশীলনে লিটন

দলের কম্বিনেশন নিয়ে তেমন কিছু জানাতে পারলেন না তাইজুল, ‘আমাদের এখনও ওভাবে বলা হয়নি। সবাইকে প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে বলা হয়েছে। যেহেতু কালকে ম্যাচ, কোন ইলেভেন খেলবে কালকে জানতে পারবো।’ 

এদিকে দাপট দেখিয়ে মিরপুরে জেতা দক্ষিণ আফ্রিকাও মুখিয়ে চট্টগ্রামে টেস্ট জিততে। উইকেট কিংবা কন্ডিশন সম্পর্কে না ভেবে প্রোটিয়ারা নিজ নিজ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মনোযোগী। তাদের অধিনায়ক এইডেন মারক্রাম বলেছেন, ‘প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই নিজ নিজ পরিকল্পনা থাকে, আমার বিশ্বাস ছেলেরা এটা জানে। বাংলাদেশের বোলারদের চাপে কীভাবে ফেলতে হবে সেটা নিয়ে ছেলেরা কাজ করছে। সে জন্য তাদেরকে নিজেদের শক্তির জায়গা থেকে খেলতে হবে।’

চট্টগ্রাম টেস্টে দলের পরিকল্পনা নিয়ে মারক্রাম আরও বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না এটা চাপের কিছু, উল্টো আমার মনে হয় এটা আমাদের জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের আগে আমাদের হাতে আরও ৫টি ম্যাচ আছে, সেগুলোতে আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে খেলতে চাই। ফাইনাল খেলি বা না খেলি এটা পরের হিসেব।’