বাংলাদেশে সাকিবের অবসর নেওয়ার ভালো সম্ভাবনা দেখছেন ফারুক

ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্ট শুরুর আগে সাকিব আল হাসান টি-টোয়েন্টি ও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট খেলে অবসর নেওয়ার ইচ্ছা তার। বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার আরও জানিয়েছিলেন, দেশে নিরাপত্তা পেলেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলবেন তিনি। দুইদিন আগে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেছেন, সাকিবকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তার এই বক্তব্যের পরই সাবেক অধিনায়কের দেশে ফেরা নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। এবার দেশের মাটিতে সাকিবের শেষ টেস্ট খেলার আশাবাদ ব্যক্ত করলেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ।

আগামী ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশ সফরে আসবে দক্ষিণ আফ্রিকা। একটি টেস্ট ঢাকায়, অন্যটি চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার বোর্ড মিটিংয়ে বসেছিলেন বিসিবির পরিচালকরা। বৈঠক শেষে ফারুক সাকিবের দেশে আসা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘সাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। বাংলাদেশের মাঠে খেলে তার অবসরে যাওয়ার খুব ভালো সম্ভাবনা আছে।’

কানপুর টেস্টের আগের দিন আকস্মিক অবসরের ঘোষণায় সবাইকে অবাক করেন সাকিব। ঘরের মাঠে আসন্ন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ দিয়ে টেস্টকে বিদায় জানানোর ইচ্ছা পূরণ হবে, যদি তিনি সরকার ও বিসিবির কাছ থেকে দেশে ফেরার ও ছাড়ার নিরাপত্তা পান। রাজনৈতিক কারণে তার দেশে ফেরা এখন অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের এই সাংসদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে। সেজন্য দেশে এসে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলতে পারলেও প্রয়োজনে দেশ ত্যাগ করতে পারবেন কিনা, সেই নিশ্চয়তা নেই। কানপুরে সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছিলেন, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ বোধ করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনও সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারবো।’

পরবর্তীতে ফারুক জানিয়েছিলেন, সাকিবের নিরাপত্তার বিষয়ে তার কিছুই করার নেই। ২৬ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমি কোনও এজেন্সি না, পুলিশ বা র‌্যাব না। কিংবা বিসিবিও এখানে কেউ না। সরকারের তরফ থেকে নিরাপত্তার বিষয়টা আসতে হবে। নিরাপত্তাটা দুই রকম। একটা হচ্ছে, ‘‘ক্লিয়ারিং ফ্রম’’ (দেশ ছাড়ার)। এটা হয়তো আপনাদের বলেছে। আরেকটা হলো দর্শকদের থেকে নিরাপত্তা। এটা আসলে তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা এখানে সংশ্লিষ্ট হতে পারবো না আসলে। এই মুহূর্তে বোর্ড থেকে এ সম্পর্কে কিছু বলা সম্ভব না। বোর্ড ব্যক্তিগতভাবে কাউকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না আসলে। সেই সক্ষমতা নেই।’

তবে আজকেও অনেকটা একই কথা বলেছেন ফারুক, ‘লিগ্যালটা তো আমি বলতে পারবো না। আমার কথা হলো সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে, আমি তো ছোট মানুষ, বোর্ড প্রেসিডেন্ট। আমার হাতে ক্ষমতা খুব কম। সাকিবের ব্যাপারটা পুরোপুরি সরকার থেকে আসতে হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, সরকার আছে, উপদেষ্টা আছেন, তারা তার সামগ্রিক দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন। আমাদের যতটুকু ক্ষমতা, স্টেডিয়ামের ভেতর ও ইনডোরে যাবে, মাঠে খেলবে, অনুশীলন করতে যাবে; এই দায়িত্ব নেওয়াটা তো খুব সহজ। এটা আমরা নিতে পারবো।’

এর আগে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছিলেন, সাকিবকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। সেই সূত্রে নাজমুল হোসেন শান্ত জানান, এটা হবে প্রত্যেক ক্রিকেটারের জন্য স্বস্তির, ‘সাকিব ভাইয়ের ব্যাপারে যেটা বললেন, উনি যদি দেশের মাটিতে গিয়ে খেলতে পারেন, আমাদের প্রত্যেক ক্রিকেটারের জন্য একটা স্বস্তির ব্যাপার হবে।’