করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বজুড়েই তার তাণ্ডব চালিয়ে মানুষের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে, মানুষের জীবনকে করে দিয়েছে স্থবির। তবে মানুষকে ঘরে বন্দি করে কিছু ভালো ‘কাজ’ও করছে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। এই যেমন ক্রীড়াপ্রেমী মানুষ তাদের পছন্দের তারকাদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারছেন। আর ক্রীড়াতারকারাও তাদের ভক্তদের সঙ্গে সম্পর্কটা ধরে রাখতে পারছেন নানা বিষয় নিয়ে কথা বলে।
অনেকে ইউটিউব চ্যানেলে এসে কথা বলছেন, অনেকে কথা বলছেন ইনস্টগ্রাম লাইভে। কেউ তার পছন্দের ক্রিকেট দল বেছে নিচ্ছেন, কেউ সেরা অধিনায়ক। কেউবা আবার তার পছন্দের তারকাদের সাক্ষাৎকার নিয়ে তুলে আনছেন অনেক অজানা তথ্য। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসন যেমন ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ভিভ রিচার্ডসের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। মাঠ ও মাঠের বাইরের অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন দুজন। রিচার্ডসকে তার ক্যারিয়ারের একটি বিশেষ মুহূর্তকে বেছে নিতে বললে তিনি তুলে আনেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই সময়ের দ্রুততম টেস্ট সেঞ্চুরি করার মুহূর্তটিকে।
১৯৮৬ সালে অ্যান্টিগার সেন্ট জন্সে ইংলিশ বোলারদের তুলাধুনো করে ৫৬ বলে টেস্ট সেঞ্চুরি করেছিলেন ভিভ। ওটাই তার অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ারে নিজের সবচেয়ে প্রিয় মুহূর্ত, কেননা ওই সেঞ্চুরিটি যে করেছিলেন নিজের মাঠে নিজের দেশের মানুষের সামনে। ভিভ বলেন, ‘সেই ছোটবেলা থেকেই এই দ্বীপে খেলে আমি আনন্দ পাই। আর একদিন টেস্ট ম্যাচে সেই দর্শকদের সামনেই আমি দ্রুততম সেঞ্চুরি করে ফেললাম, যা অবশ্যই বিশেষ কিছু।’ এই সেঞ্চুরির কথা বলেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান যেন ফিরে যান পুরোনো দিনে, ‘পুরোনো দিনের কথা যখন মনে পড়ে, মনে হয় এই তো আমি সবে মাত্র এলাম…। ছোট স্কুলে পড়তে পড়তে যুবক হয়ে ওঠা, আমার প্রিয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলা- সব মনে পড়ে যায়।’
অসামান্য প্রতিভাবান এক বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান হিসেবে সারা বিশ্বই ভিভকে কুর্নিশ করেছে। কিন্তু তার দেশ অ্যান্টিগার মানুষের কাছে এই পরিচয় দেওয়ার জন্য ব্যাট হাতে যেন কিছু করার ছিল। নিজের মাঠে করা ওই সেঞ্চুরি তাই তার কাছে ছিল বিশাল তৃপ্তির। রিচার্ডস বলে যান, ‘অ্যান্টিগার মানুষদের বোঝানো খুব কঠিন। তারা রেডিও শুনবে, রিচি বেনো বা অন্যদের ধারাভাষ্য শুনবে। কিন্তু তার এটাও বলবে যে আমরা শুনতে চাই না, দেখতে চাই। সুতরাং ঘরের মাঠে এরকম একটি অর্জন বিশেষ মুহূর্ত তো হবেই। এটা আছে আমার বুকের গভীরে। একটা করে ছক্কা মারলেই সেটির জন্য অনুদান আসছিল দাতব্য কাজের।’