৩য় প্রান্তিক শেষে ওয়ালটনের মুনাফা ৬৯৬ কোটি টাকা

২০২৪-২৫ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিক শেষে (২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত) ৬৯৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা মুনাফা অর্জিত হয়েছে পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স কোম্পানি ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের।
 
চলতি হিসাব বছরের ৩১ মার্চ তারিখে সমাপ্ত সময়ে কোম্পানিটির ৩য় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে। রবিবার (২৭ এপ্রিল) কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের ৪৪তম সভায় আলোচ্য সময়ের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনের তথ্যমতে, করোনা পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বাণিজ্য অস্থিরতা, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ইত্যাদি কারণে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে বৈশ্বিক অর্থনীতি। অধিকন্তু, আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালের ব্যাপক মূল্য বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে কাঁচামালের ব্যয় বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। সেইসঙ্গে কোম্পানির পরিচালন ব্যয়ে প্রভাব ফেলেছে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি। এদিকে ফাইন্যান্স অ্যাক্ট ২০২৪ অনুযায়ী রেফ্রিজারেটর সরবরাহ পর্যায়ে ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার পাশাপাশি এয়ার কন্ডিশনারের ওপর নতুন করে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে।

ব্যয় বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে চলতি হিসাব বছরের ৩১ মার্চ, ২০২৫ সমাপ্ত সময়ে কোম্পানির অপারেটিং প্রফিট মার্জিন পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের ২৪ দশমিক ৭৩ শতাংশ থেকে কমে ২২ দশমিক ০৯ শতাংশ হয়েছে। এছাড়াও আলোচ্য সময়ে উচ্চ সুদ হার এবং ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে বিক্রয়ের শতকরা হারের বিপরীতে আর্থিক ব্যয় পূর্ববর্তী বছরের একই সময়ের ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ২৯ শতাংশ হয়েছে।

এসব সার্বিক অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের প্রতিফলন হিসেবে চলতি হিসাব বছরের জুলাই’২০২৪ থেকে মার্চ’২০২৫ পর্যন্ত সমাপ্ত সময়ে ওয়ালটনের কর পরবর্তী নিট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯৬ দশমিক ৪৪ কোটি টাকায়। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির কর পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছিল ৭৬২ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা। 

চলতি হিসাব বছরের শেষ প্রান্তিক অর্থাৎ এপ্রিল-জুন’২০২৫ সময় ইলেকট্রনিক্স পণ্য বিক্রির প্রধান মৌসুম হওয়ায় কোম্পানির মুনাফা আরো সন্তোষজনক অবস্থানে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। 

বোর্ড সভায় আর্থিক প্রতিবেদনের পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রথম সর্বাধুনিক প্রযুক্তির লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি সেল উৎপাদন প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উদ্ভাবনী প্রযুক্তির পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আরো এক ধাপ এগিয়ে যাবে। এছাড়াও এ খাতে দেশের আমদানি নির্ভরতা বহুলাংশে হ্রাস পাবে, নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাবে বলে দৃঢ় আশাবাদী ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।