‘হত্যা না করে হাত-পা কেটে ফেললেও ছেলের মুখে বাবা ডাক শুনতে পারতাম’

হত্যা না করে একটি হাত বা পা কেটে ফেললেও ছেলের মুখে অন্তত বাবা ডাক শুনতে পারতাম। তার কথা মনে পরলে কলিজা ফেটে যায়, চোখ বন্ধ হয়ে আসে। কান্না বিজড়িত হয়ে এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন বনানীর প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম পারভেজের বাবা মো. জসীম উদ্দিন। এ সময় অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন তার সহকর্মী ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালে বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পারভেজ হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে ছেলের স্মৃতিচারণ করেন তিনি।

মো. জসীম উদ্দিন বলেন, অনেক আশা করে ছেলেকে এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছিলাম। ছেলেকে হারাতে হবে জানলে হয়তো ভর্তি করাতাম না। আজ কয়দিন ছেলের কথা মনে করে চোখের পানিও শুকিয়ে গেছে। কান্নাও করতে পারিনি। তিনি বলেন, আর কোনও মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়।

তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। এ সময় ছেলের হত্যাকারীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দাবি করেন পারভেজের বাবা।

পারভেজের ভাই ও ময়মনসিংহের ভালুকার ছাত্রদল নেতা হুমায়ুন কবির বলেন, আমার বাবাসহ পুরো পরিবারই জিয়ার আদর্শের রাজনীতিতে বিশ্বাসী। পারভেজও ছিল ছাত্রদলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। এলাকায়ও সে ছাত্রদলের কাজে সময় দিতো। অল্প দিনে সবার মন জয় করেছে। তিনি খুনিদের ফাঁসি দাবি করেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে বিলম্ব কেন প্রশাসনের কাছে জবাব চান তিনি।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি মো. আবু হোরায়রার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম রাজীবুল ইসলাম তালুকদার বিন্দুর সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

এর আগে গত ১৯ এপ্রিল বিকাল ৪টায় বনানীতে প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২২) কতিপয় শিক্ষার্থীর ছুরিকাঘাতে নিহত হন।

পারভেজ হত্যার পরদিন ২০ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করে এর জন্য বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের দায়ী করেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। যদিও এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধীরা।