আ.লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার ঘোষণা এনসিপির

দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে গণহত্যার বিচার দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।

শুক্রবার (২১ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, আজ থেকে সাত মাস আগে বাংলাদেশে যে ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা তাদের রক্ত দিয়ে সে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার বিচারকার্য সম্পন্ন করবো। কিন্তু ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে হস্তান্তর না করে ভার্চুয়ালি তাকে কথা বলার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা এনসিপির পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করতে চাই।‘

আওয়ামী লীগ কোনও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি ফ্যাসিবাদী দল। আওয়ামী লীগের দল ও নৌকা মার্কার বিরুদ্ধে ‘৩৬ জুলাই’-এ দেশের ছাত্র-জনতা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। সারা দেশের সব ছাত্র-জনতাকে আমরা আহ্বান জানাই, এনসিপির নেতৃত্বে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
 
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগের বিচার চলাকালীন আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদের সব সহযোগী ব্যক্তি ও সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। 

নাহিদ বলেন, সম্প্রতি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদনে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধ আন্তর্জাতিক অপরাধের শামিল। আওয়ামী লীগের মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে এত সুস্পষ্ট আন্তর্জাতিক বক্তব্য থাকার পরেও বিচারিক প্রক্রিয়ায় ধীরগতি অত্যন্ত নিন্দনীয়। জাতীয় নাগরিক পার্টি অবিলম্বে জুলাই গণহত্যাসহ বিগত ফ্যাসিবাদী রেজিমের সংঘটিত গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়।

গতকালের ফেসবুক পোস্ট ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি, রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে যাবে সবকিছু রাজনীতিবিদরা নির্ধারণ করবে। এগুলো রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত। ৫ আগস্টের পরে সেনাবাহিনীর সাথে আমাদের বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন প্রোগ্রামে দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে তবে ১১ তারিখের মিটিং-টির প্রেক্ষাপট ভিন্ন ছিল। সেখানে অপরপ্রান্তে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। সেখানকার ঘটনাপ্রবাহ আমি ফেসবুকে ডিসক্লোজ করেছি। 

নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পূর্ব পর্যন্ত আমরা ছাত্রজনতাকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করেছি। আমাদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিগুলো আমরা ঐকমত্যে রয়েছি ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি অনুভব করছি না।

এসময় এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, প্রধান সমন্বয়কারী নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক তাসনিম জারাসহ একাধিক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।