ফেসবুক পোস্টের জন্য মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতারের দাবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন (একাংশ) নেতা মেঘমল্লার বসু নিজের ফেসবুক পোস্টে ‘লাল সন্ত্রাসের দিকে  আহ্বান’ করায় জীবন নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন  বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তারা অবিলম্বে মেঘমল্লার বসুকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবিন করেন। এছাড়া ‘লাল সন্ত্রাসের দিকে আহ্বান’ করায় শাহবাগ থানায় মেঘমল্লারের বিরুদ্ধে জিডি করবেন বলেও জানান এই শিক্ষার্থীরা।

লিখিত বক্তব্য পাঠকালে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী এবি জুবাইর বলেন, যেসব শিক্ষার্থী গণতান্ত্রিক উপায়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন, তারা শঙ্কা করছেন যে, তাদেরকে দমন করতে অতীতের মতো পুনরায় এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী লাল সন্ত্রাসের আশ্রয় নিতে যাচ্ছে।

মেঘমল্লার বসুর প্রথম পোস্টের স্ক্রিনশটতারা বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। কারণ আমরা ইতিহাসে দেখেছি— এই লাল সন্ত্রাসীরা কীভাবে ভিন্নমতের মানুষকে বীভৎসভাবে খুন করেছে। শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে অনতিবিলম্বে লাল সন্ত্রাসের উসকানিদাতা ও পর্দার আড়ালের কুশীলবদের অবিলম্বে আইনের আওতায় নিয়ে আসা জরুরি।

সিরাজ শিকদারের গ্রাফিতি মুছে দেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে বলা হয়, কমিউনিস্ট রাজনীতির অন্যতম আলোচিত নেতৃত্ব মাওবাদী নেতা সিরাজ সিকদার। পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী একটি মাওবাদী পার্টি। রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পথ হিসেবে পার্লামেন্টারি পথ বর্জন করে গ্রামভিত্তিক দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধের রাজনীতি গ্রহণ ও গোপন পার্টি গঠন করেন সিরাজ শিকদার।  গোপন ও সশস্ত্র বিদ্রোহ মাওবাদী আইডিওলোজি প্রতিষ্ঠা করলে সাধারণ জনগণের সঙ্গে বেইমানি হবে। লাইব্রেরির দেয়ালে সিরাজ শিকদারের গ্রাফিতি একই রকম চেতনার অবতারণা করতে পারে ও  মেঘমল্লারের লাল সন্ত্রাসের ভ্যালিডিটি সিরাজ শিকদারকে কেন্দ্র করেই আবির্ভূত হতে পারে, বিধায় প্রতিবাদী ছাত্রজনতা তার গ্রাফিতি মুছে দেয়।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) মেঘমল্লার বসু তার ফেসবুক আইডিতে এক পোস্টে বলেন, ‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র উপায়— যা প্রান্তিকদের স্বার্থে প্রতিরক্ষামূলক সহিংসতা। এরপর রাত সোয়া ১২টায় এই পোস্টের প্রতিবাদ জানিয়ে সাবেক সমন্বয়ক মাহিন সরকারের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীদের একটি দল।

মেঘমল্লার বসুর দ্বিতীয় পোস্টের স্ক্রিনশট

বিষয়টি নিয়ে শনিবার (১৮ জানুয়ারি)  মেঘমল্লার আরেকটি পোস্টে বলেন, ‘‘আমি ঐকান্তিকভাবে আমার কমরেডদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আপনারা মাঠে লড়তেছেন আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির জন্য। এমতাবস্থায় আমার ‘অক্ষম আস্ফালন’ শুধুই একটা ডাইভার্শনের সুযোগ তৈরি করলো। এর বাইরে যা বলছি তা কোর্টে, পাবলিকে, আখেরাতে সর্বত্র ডিফেন্ড করতে প্রস্তুত। কিন্তু ফেসবুকে আর না। মামলা দিলে মামলা দেন, নাটক কইরেন না। পরবর্তীতে আমারে বোমা মারলেও আর ফেসবুক প্রতিক্রিয়া পাবেন না। ধন্যবাদ।’’

এ বিষয়ে মেঘমল্লার বসু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ফেসবুক স্ট্যাটাসে আক্রমণত্মক সন্ত্রাসের কথা বলিনি, প্রতিরক্ষামূলক সন্ত্রাসের কথা বলেছি।’