‘শহীদ ডা. মিলন দিবস’ উপলক্ষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ চত্বরে শহীদ ডা. শামসুল আলম খান মিলনের সমাধি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন শহীদ ডা. মিলন সৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কেন্দ্রীয় কমিটি। এছাড়া বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে ‘ডা. মিলনের আত্মবলিদান: ৯০-এর গণ-অভ্যুত্থান’ শীর্ষক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান জাসদ নেতারা।
সভায় বক্তারা শহীদ ডা. মিলন, শহীদ শাজাহান সিরাজ, শহীদ মোজাম্মেল, শহীদ দীপালি সাহাসহ ১৯৮২ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সামরিক শাসনবিরোধী ঐতিহাসিক গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও ৯০-এর ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ক্ষমতাসীনরা রিসেট বাটন পুশ করে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানকে যতই মুছে দেওয়ার অপচেষ্টা চালাক না কেন কোনও লাভ হবে না।
তারা বলেন, দেশে এখন রাজনৈতিক শূন্যতা, শাসন শূন্যতা চলছে। ক্ষমতাসীনদের প্রতিহিংসা পরায়ণতার আগুণে দেশ জ্বলছে। ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতার চেয়ার থেকেই গৃহযুদ্ধের ডাক দিয়ে তথাকথিত দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার কার্ড খেলে উস্কানি দিয়ে দেশকে ভয়াবহ বিভাজন ও বিভক্তির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
বক্তারা বলেন, দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য রাজনৈতিক শূন্যতা, শাসন শূন্যতার অবসান করতে একটি প্রতিহিংসামুক্ত, পক্ষপাতমুক্ত, দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান করে নির্বাচিত সাংবিধানিক সরকারের হাতে ক্ষমতা ন্যাস্ত করার বিকল্প নাই।
তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালকে প্রতিহিংসার হাতিয়ারে পরিণত করতে আইন পরিবর্তন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিচারের নামে প্রহসন করে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে হত্যার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
বক্তারা যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে প্রতিহিংসামূলক ঢালাও অর্ধ শতাধিক মিথ্যা মামলায় আটকের অভিযোগে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবি জানান।
জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সফিউদ্দিন মোল্লাহর সভাপতিত্বে ও দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন– জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোহসীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীর্জা মো. আনোয়ারুল হক, কেন্দ্রীয় স্কপের অন্যতম নেতা ও জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইফুজ্জামান বাদশা, জাতীয় যুব জোটের সভাপতি শরিফুল কবির স্বপন, এরশাদ সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর সর্দার, জাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাজী সাইমুল হক, জাতীয় যুব জোটের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন খান বাচ্চু, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র) কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি রাশিদুল হক ননী প্রমুখ।
১৯৯০ সালের ২৭ নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় গুলিতে নিহত হন ডা. শামসুল আলম খান মিলন।