ছাত্র ফেডারেশন থেকে অব্যাহতি নিলেন সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছেন।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তার নিজস্ব প্রোফাইলে এক পোস্টের মাধ্যমে তিনি বিষয়টি জানিয়েছেন। 

তিনি লিখেছেন, নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে আমি উমামা ফাতেমা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিলাম।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আসলে আমি ফেসবুক পোস্টেই সব কিছু ক্লিয়ার করেছি, কোনও কিছু লুকাইনি। বাংলাদেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এভাবে রাজনীতি চলতে পারি কিনা। সেই বিষয়টা নিয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভাবতে চাচ্ছি। এই জায়গা থেকেই আমি দল থেকে অব্যাহতি নিয়েছি এবং বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে আবার বেশ কথা হয়েছে। সবশেষ তারা আমার মতামতকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। সংগঠনের সঙ্গে আমার কোনও বিদ্বেষ বা কোনও কিছুই হয়নি, পারস্পারিক আলোচনার ভিত্তিতেই আমি অব্যাহতি নিয়েছি।’

আপনি রাজনৈতিক মাঠে অন্য কোনোভাবে মুভ করবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে এখনও সেভাবে কিছু ভাবছি না। আমি কিছুদিন নিজে থেকে ভাবতে চাচ্ছি। অনেকে আবার এমন প্রশ্ন করেছেন, আমি বৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে কাজ করবো কিনা। সে বিষয়েও আমি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেইনি। আমি আপাতত ভাবছি, কীভাবে মুভ করবো— সেটা পরে বলতে পারবো।’

উমামার ফেসবুক পোস্ট

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সাথে তার দীর্ঘদিনের পথচলা জানিয়ে তিনি লেখেন, এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের অনেকের চিন্তা-চেতনার জগতকে যেমন পালটে দিয়েছে, তেমনই কাজের পরিসরও ব্যাপক মাত্রায় বিস্তৃত করেছে! লড়াইয়ের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে! পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে, সময়ের প্রয়োজনে এবং সামগ্রিক বিবেচনায় আমার পক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ফেডারেশনের সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতির আবেদন করি। যা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে আমার যাত্রা এখানেই সমাপ্ত হলো। 

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের জন্য শুভকামনা জানিয়ে তিনি আরও লেখেন, আশা করি, ছাত্র ফেডারেশন দেশের আপামর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সূচিত হওয়া নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষাকে তার সাংগঠনিক কাঠামোতে আরও গভীরভাবে ধারণ করে সামনের দিকে আগুয়ান হবে!

এদিকে ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা তাকে অব্যাহতি দিয়ে তার স্থলে নতুন সাকিবুর রনিকে দায়িত্ব দিয়েছে।