গণসংহতির বাজেট পর্যালোচনা

অর্থনৈতিক সংকট প্রথমবারের মতো স্বীকার করলো সরকার

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের পর্যালোচনা করেছে গণসংহতি আন্দোলন। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নতুন অর্থবছরের বাজেটে প্রথমবারের মতো সরকার স্বীকার করলো যে, দেশ একটা অর্থনৈতিক সংকটের মুখে। এই সংকট আসলে এক বছর বা একদিনে তৈরি হয়নি, বহুদিন থেকেই এই সংকট তৈরি হচ্ছে। বহুদিন থেকে সেই সংকট অস্বীকার করে যেভাবে অর্থনীতি চালানো হয়েছে, তারই পরিণামে এই সংকট আরও গভীর হয়েছে।

সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর হাতিরপুলে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বাজেট পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে দলের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এসব কথা তুলে ধরেন।

লিখিত বক্তব্যে আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘সরকার ঋণ করে মেগা প্রকল্পে দফায় দফায় খরচ বাড়িয়ে দেশকে ঋণগ্রস্ত করে ফেলেছে। এবারের বাজেটের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে— এসব ঋণের সুদ পরিশোধ করা।’

‘অথচ সংকটের কথা বললেও, অর্থনীতির সংকোচনের নানান ধরনের কথা বললেও, সংকটের আসল কারণ যে— এই মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি, তার কোনও হিসাব এ বাজেটে নেই। মেগা প্রকল্পগুলো অব্যাহত রাখা হয়েছে এবং আরও ঋণ করে ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা করছে সরকার।’

গণসংহতি মনে করে, অর্থনৈতিক সংকোচনের কথা বলে যেভাবে বিশেষত ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণপত্র খোলা থেকে বিরত রাখা হচ্ছে, বা ঋণপত্র খোলায় যত বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে, তাতে অর্থনীতির গতি মন্থর হবে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কমবে, কর্মসংস্থান কমবে এবং একটা বিরাট অংশের মানুষের ভেতরে তার প্রভাব ছড়িয়ে যাবে। সরকার যে হারে ব্যাংকগুলো থেকে ঋণ করার পরিকল্পনা করেছে, তাতে সামগ্রিকভাবে বেসরকারি খাত এবং বিশেষভাবে ক্ষুদ্র-মাঝারি উদ্যোক্তারা ব্যাংক থেকে ঋণ পাবেন না। আর দেশের অর্থনীতিতে যেহেতু বেসরকারি খাতের ভূমিকাই বেশি, সেক্ষেত্রে সংকট আরও ঘনীভূত হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের বাজেট পর্যালোচনায় দলের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই বাজেট দেশে আর্থিক খাত লুটপাটেরই আরেকটা নতুন বাজেট। লুটপাটের বাজেটকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণের স্বার্থে বাজেট প্রণয়ন করতে হলে জনগণের ভোটে নির্বাচিত জনবান্ধব সরকার দরকার।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— দলটির রাজনৈতিক পরিষদের অন্যতম সদস্য হাসান মারুফ রুমী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূইয়া, জুলহাসনাইন বাবু,  কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আলিফ দেওয়ান, মিজানুর রহমান মোল্লা।