যারা ১০০ গাড়ি নিয়ে ক্যাম্পেইন করে, তারা কী করবে আমরা বুঝি: মির্জা ফখরুল

জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের একশ গাড়ি নিয়ে পঞ্চগড় সফর সম্পর্কে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘যারা একশ গাড়ি নিয়ে ইলেকশন ক্যাম্পেইন (নির্বাচনি প্রচারাভিযান) করতে যায় তারা কী করবে সেটা আমরা ভালো বুঝি। বিএনপি জনগণের সঙ্গে আছে, অতীতে ছিল, থাকবে এবং বিএনপি অবশ্যই জয়যুক্ত হবে, ইনশাল্লাহ।’

মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন। রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান ও নুরুল ইসলাম মনি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক লুৎফর রহমান এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু বক্তব্য রাখেন।

ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান নির্দেশ দিয়েছেন যে, আপনারা সঠিকভাবে সুন্দরভাবে… জনগণ যেন ভালোবেসে আপনাদেরকে সেই কাজগুলো (জনকল্যাণমূলক) করতে থাকুন। জনগণ যাতে বিএনপিকে ভালোবাসে, বিএনপির কাছে আসে সেই কাজগুলো আমরা করি।”

সভাপতির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিএনপির ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কারের কথা উল্লেখ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান সাহেব দেশে প্রথম সংস্কার করেছে… আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব ৩১ দফা দিয়েছেন। সংস্কার নতুন জিনিস নয়।”

‘‘আজকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের অনেকগুলো বিশাল পাহাড় নিয়ে এসেছেন। অনেকগুলো বিষয়ের অবতারণা করেছেন, যে বিষয়গুলো আমাদের জনগণ বুঝেও না, বুঝতেও পারে না। আমরা সেজন্য আমাদের দল থেকে তাদের সংস্কারে প্রতিটি বিষয়ের উত্তর দিয়েছি… গতকাল (সোমবার) সেগুলো পরিপূর্ণভাবে দিয়েছি… যেসব বিষয় আমরা একমত নই সেটাও আমরা তাদেরকে জানিয়েছি। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলেছি, বাংলাদেশের জনগণের কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য সেই বিষয়গুলো করা দরকার।” 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, অতিদ্রুত নির্বাচনের দিন-তারিখ যদি ঘোষণা করা হয় তাহলে জনগণ নির্বাচনমুখী হয়ে যাবে এবং নির্বাচনমুখী জনগণের সামনে যেকোনও রকমের ষড়যন্ত্র টিকতে পারবে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস– জনগণই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবে।’

‘‘দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে, দেশের আইনশৃঙ্খলার স্বার্থে, অর্থনীতির স্বার্থে এবং বর্তমান যে সরকার এই সরকারের স্বার্থে আমরা আজকে স্বাধীনতা দিবসে আহ্বান জানাতে চাই, দাবি করতে চাই, অনতিবিলম্বে কোনও ধরনের উছিলা, কারও কোনও আবদার এইগুলোর দিকে আপনারা লক্ষ্য না করে নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করেন… জনগণই ঠিক করে নেবে ষড়যন্ত্র যারা করে, সমস্যা যারা সৃষ্টি করে তার বিরুদ্ধে জনগণই দায়িত্ব নিয়ে সমাধান করবে।”

স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘স্বৈরাচার পতনের পরে যেখানে গণতন্ত্র উত্তরণের কথা ছিল, যে জন্য দীর্ঘ ১৬ বছর আন্দোলন হয়েছে এই উত্তরণে কোনও বাধা সৃষ্টি হওয়ার কারণ ছিল না। কারণ এখানে সমস্ত জাতি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে লড়াই করে তাকে বিতাড়িত করেছি… যেখানে জনগণের বিজয়ের পরে আবার আমাদের গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হতে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘বিগত দিনের গণতন্ত্র, জনগণের মালিকানা, জনগণের ভোটাধিকার, জনগণের বাকস্বাধীনতা, জনগণের মানবাধিকার সব কিছু আবার প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছে। আমরা জানি যে, আগে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এবং ক্ষমতা দখল করার জন্য যে প্রক্রিয়াগুলো বিভিন্ন স্বৈরাচাররা গ্রহণ করেছে, আমরা তো ভেবে ছিলাম আমরা সেখান থেকে মুক্ত হয়ে গেছি এবং একটা মুক্ত পরিবেশে দেশের মানুষ তার মালিকানা ভোগ করবে, একটি মুক্ত নির্বাচন এবং নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ফিরে আসবে সেটা আজকে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আমাদের এখন সর্তক থাকতে হবে।”