বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সংস্কারের পাশাপাশি রাজনীতির বড় পুঁজি জনগণকে নিয়ে আগে ভাবতে হবে।
রবিবার (২৩ মার্চ) পুরানা পল্টনের একটি রেস্টুরেন্টে জাতীয়তাবাদী সমমনা জেটের ইফতার মাহফিলে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের কারণে দেশ মাফিয়ামুক্ত হয়েছে। দিন শেষে আমরা যে বিষয়গুলো নিয়ে রাজনীতি করি— এর মধ্যে সবচেয়ে বড় পুঁজি জনগণকে নিয়ে আগে ভাবতে হবে। তারা কী প্রত্যাশা করছেন তা গুরুত্ব দিতে হবে।’
প্রসঙ্গক্রমে ২০১০ সালে যুক্তরাজ্যের একটি রাজনৈতিক বৈঠকের কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান। এতে স্বাস্থ্য সেক্টর নিয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন তিনটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। সেখানে একটি বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। জরুরি মুহূর্তে কোন দল সবচেয়ে কম সময়ে রোগীর কাছে অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছাতে পারবে। তখন একজন বললেন, তিনি ১২ মিনিটের জায়গায় ১০ মিনিটে পৌঁছাতে চেষ্টা করবেন। তারেক রহমান বলেন, ‘একটি দেশের ক্ষমতা জনগণের হাতে থাকলে সবকিছুই দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। আমি বোঝাতে চাই— জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকলে দ্রুত যেকোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্নভাবে দেশকে ধ্বংস করেছে। বিগত সাড়ে ১৫ বছরেও ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের সাংবিধানিক সব কাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নির্বাচনি কাঠামো। এ কাঠামোগুলোর মেরামত না করলে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়।’
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের সংস্কার প্রস্তাব সবার আগে দিয়েছে বিএনপি। দেশের সংকটকালে আমরা পলাতক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রাজপথে ছিলাম। প্রথমে ২৭ দফা এবং পরবর্তীকালে ৩১ দফা রূপরেখা দিয়েছি। সবগুলোই জনগণের জন্য। তাই আগামীতে আমাদের সব কর্মসূচি হবে জনবান্ধব।’
জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সভাপতি সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান প্রমুখ।
ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘সম্প্রতি সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে, যা আমাদের জন্য লজ্জার। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা যাবে না। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদেরও সতর্ক থাকতে হবে। সংস্কারের নামে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবো।’ তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের কোনও সুযোগ নেই।’
সমমনা জোট নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান শাওন সাদিকী, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি ব্যারিস্টার নাসিম খানম, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক লীগের চেয়ারম্যান ক্বারি মো.আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক খোকন চন্দ্র দাস, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার একাংশের সভাপতি খন্দকার লুৎফর রহমান, গণ দলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন জাগপার একাংশের সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান।