ডাকসুর সভাপতি সরাসরি ছাত্রদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে: ঢাবি ছাত্রদল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আগে এর গঠনতন্ত্র সংস্কারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ঢাবি শাখা। পাশাপাশি ছাত্র সংসদে উপাচার্যের ক্ষমতা কমানোরও দাবি তোলা হয়েছে। এ সময় দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ডাকসুর সভাপতিকে সরাসরি শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে। 

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ডাকসু নিয়ে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব দাবির কথা জানানো হয়। ডাকসুর প্রস্তাবনায় বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের জন্য ১৮টি ও হল সংসদের জন্য ৯টি সংশোধনী প্রস্তাব করেছেন ছাত্র সংগঠনটি।

ব্রিফিংয়ে ঢাবি ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, নিয়ম মাফিক ডাকসু নির্বাচন ছাড়া প্রত্যাশা পূরণ সম্ভব না। আমাদের সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন হলে সাধারণ শিক্ষার্থী ও মানুষের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। ডাকসুকে কার্যকর করতে হলে গঠনতন্ত্রে সংস্কার দরকার। আর ঢাবির উপাচার্য নির্বাচিত প্রতিনিধি না হয়েও ডাকসুর অভিভাবক হওয়া স্বৈরতন্ত্রেরই প্রতিচ্ছবি। ডাকসু নির্বাচনের ৩০ দিন আগে পূর্ণাঙ্গ ভোটার তালিকা প্রকাশ ও আপিলের সুযোগ রাখারও দাবি জানানো হয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে।

এ সময় সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ডাকসুর বর্তমান গঠনতন্ত্র সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাহিদা পূরণে সক্ষম নয়, এর সংস্কার করতে হবে। ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে ৩০ বছরের বয়স সীমা না রেখে সব নিয়মিত ছাত্রদের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে।
 
ডাকসু সভাপতির পদকে সরাসরি ভোটে শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্বাচিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ঢাবির প্রতিটি সিদ্ধান্তে ছাত্র প্রতিনিধির কার্যকর অংশগ্রহণ থাকতে হবে।

এরআগে বিকাল ৩টায় ডাকসু নির্বাচন নিয়ে উপাচার্য স্মারকলিপি ও রেজিস্টারকে ডাকসুর সংস্কার প্রস্তাবনা দেয় সংগঠনটি। স্মারকলিপিতে দাবি জানিয়ে তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আদেশ ১৯৭৩ সংশোধন করে নিয়মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদসমূহের নির্বাহী কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ফোরাম, যেমন- সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিনেটে নির্বাচিত ছাত্র-প্রতিনিধিদের প্রতিনিধিত্ব থাকার বিধানগুলো সরাসরি অন্তর্ভুক্ত করা।

ডাকসু ও হল সংসদসগুলোর নির্বাহী কমিটির নির্বাচনের কমপক্ষে ৬০ দিন আগে বিদ্যমান সিন্ডিকেট প্রতিস্থাপন করে নিরপেক্ষ সদস্য সম্বলিত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সিন্ডিকেট তৈরি করা। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ঘটে যাওয়া ঘটনার আলোকে, প্রতিটি ভোটারের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আবাসিক হলের পরিবর্তে একাডেমিক ভবনগুলোতে ভোটকেন্দ্র তৈরি করা।

ডাকসু ও হল সংসদগুলোর নির্বাহী কমিটির নির্বাচনের কমপক্ষে ৩০ দিন আগে ভোটার তালিকা প্রকাশ এবং চূড়ান্ত করা এবং এবিষয়ে একটি স্বচ্ছ আপিল প্রক্রিয়া রাখার দাবি জানিয়ে আরও বলা হয়, ডাকসু ও হল সংসদসমূহের নির্বাহী কমিটির ইশতেহার, যোগাযোগ এবং নির্বাচনের সংবাদ প্রকাশের জন্য একটি নিবেদিত প্রাণ ডাকসু ওয়েবসাইট এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অফিসিয়াল অ্যাকাউন্ট তৈরি করা, যাতে করে এ বিষয়ে গুজব কিংবা অপপ্রচার রোধ করা সহজ হয়।