২০ কোটি টাকার ত্রাণ সংগ্রহ, অভ্যুত্থানে নিহতদের সহায়তা দেবে বিএনপি

দেশের পূর্বাঞ্চলের জেলারগুলোর দুর্গত মানুষের জন্য ২০ কোটি টাকার বেশি ত্রাণ সামগ্রী, নগদ অর্থ সংগ্রহ করেছে বিএনপি। দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমে এ অর্থ ব্যয়  করবে দলটি।

শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের ত্রাণ সংগ্রহ কমিটির এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন এ তথ্য জানান। দেশের পূর্বাঞ্চলে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে ১৩৭ জন শহীদ হয়েছেন, তাদেরকেও এই তহবিল থেকে সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘‘গত ২৫ তারিখ থেকে আজ পর্যন্ত আমরা বিএনপি এবং বিএনপি পরিবার প্রায় ২০ কোটি টাকারও বেশি নগদ আর্থিক এবং ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ করেছি।”

তিনি বলেন, ‘ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা দক্ষিণ, কুমিল্লা উত্তর, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজার, চট্টগ্রামের একটা অংশ… সবচেয়ে বেশি বন্যাদুর্গত এলাকা…. পরে চাঁদপুরের কয়েকটা উপজেলাও বন্যা কবলিত হয়েছিল।”

‘প্রাথমিকভাবে আমাদের ত্রাণ কার্যক্রমটা ছিল বন্যার্ত মানুষকে উদ্ধার করা। ওই সময়ে মানুষকে খাবার সরবরাহ করা… এটি দলের জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার দল ও অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতারা করেছেন। বিএনপি ক্ষমতায় নেই… তারপরও বিএনপি জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে এ দায়িত্ব পালন করছে। নেতাকর্মীরা মানুষের পাশে ছিলেন, থাকবে।”

জাহিদ বলেন, ‘‘আমাদের ত্রাণ সংগ্রহে বিএনপির পরিবার ছাড়াও সাধারণ মানুষ, গৃহবধূ, রিকশাশ্রমিক, সাধারণ শ্রমিকও আমাদের কাছে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমরা প্রতিটি টাকার হিসাব রেখেছি, যারা ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন তাদেরকে রশিদ দিয়েছি।”

‘‘অনেকে অনেক টাকা দিতে চেয়েছে, অনেকের টাকা নেই নাই। তিনজনের টাকা ভুলে নিয়েছি, অজানা ছিল আমাদের। সেই ত্রিশ লাখ টাকা আমরা ফেরত দিয়েছি। নৈতিকভাবে আমরা মনে করি, উনাদের টাকা নেওয়া সঠিক হবে না, নেওয়া উচিত হবে না। সেজন্য সেই সমস্ত মানুষের টাকা পে-অর্ডার করে ফেরত দিয়েছি। কাজেই আমরা ত্রাণ সংগ্রহে যেমন স্বচ্ছ ছিলাম, ত্রাণ বিতরণেরও স্বচ্ছ আছি।”

তিনি বলেন, ‘‘ত্রাণের জন্য বিএনপির দীর্ঘদিনের একটি সেন্ট্রাল রিলিফ অ্যান্ড রিহ্যালিটেশন ফান্ড আছে, সেখানে ৬০ কোটি টাকার বেশি রয়েছে…  সেটা দিয়ে আমরা পুনর্বাসন কাজগুলো পরিচালনা করবো। সেজন্য গণমাধ্যমসহ দেশবাসী এবং যারা সহায়তা করেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞ।”

জাহিদ বলেন, ‘‘এখন পানি নেমে যাচ্ছে, এখন শুরু হয়েছে রোগ-বলাই… কিছু সংক্রামক ব্যাধি… উপদ্রুত এলাকাগুলোতে মেডিক্যাল ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। আমাদের ডাক্তাররা শুধু যাচ্ছেন তা না, পর্যাপ্ত পরিমাণ অষুধ বিনামূল্যে সরবারহ করা হচ্ছে… জিয়া‌উর রহমান ফাউন্ডেশন, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাবসহ দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা সহযোগিতা করছেন।”

তিনি জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে বন্যা পরবর্তী পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে শিশুদের মধ্যে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের গৃহ নির্মাণের সহযোগিতা করা হবে এবং সেই কাজও শুরু করা হয়েছে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ত্রাণ সংগ্রহ কমিটির সদস্য আবদুস সালাম, মীর সরাফত আলী সপু, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কাজী আবুল বাশার, রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, আমিনুল হক, হাসান জাফির তুহিন, রেজাউল কবির পল এবং ত্রাণ সংগ্রহ কমিটির সদস্য সচিব দলের যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।