‘কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগে দুর্নীতি বাড়বে’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেছেন, কালো টাকা কর  (ট্যাক্স) দিয়ে সাদা করার সযোগে দেশে দুর্নীতি আরও বাড়বে। শুক্রবার (৭ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এজে মোহাম্মদ আলীর স্মরণে আয়োজিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এজে মোহাম্মদ আলীর এই স্মরণসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

জমির উদ্দিন সরকার বলেন, বাজেটে দেখলাম লুটপাটের কালো টাকা ১৫ শতাংশ ট্যাক্স দিয়ে সাদা করা যাবে। ১৫ শতাংশ কর দিয়ে যদি অবৈধ উপায়ে অর্জিত টাকা বৈধ করা যায়, আমরা যারা খেটে খাওয়া মানুষ, আমরাও তো ট্যাক্স দিচ্ছি। তাহলে আমাদের সাথে তো তাদের তফাৎটা বেশি না।

দুর্নীতি করে টাকা রাখবে, আর সেই টাকা বাজেয়াপ্ত হবে না।  ট্যাক্স দিয়ে যদি ওই টাকা সাদা করা যায় তাহলে তো দুর্নীতি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

কালো টাকা সাদা করা সম্পর্কিত আইনের বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিএনপির এই রাজনীতিবিদ বলেন, আইনটা করার সময় যেন অর্জন করা টাকা আর সংগ্রহ করা টাকার মধ্যে পার্থক্য থাকে।

গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা ভোট দিতে যাই বাক্সে ভোটটা পরে, তারপরেও দেখা যায় যে আমরা হেরে যাচ্ছি। এটা কীভাবে সমাধান করবেন? এগুলো তো রুশ বিপ্লবের মতো। সেখানে শ্রমিকদের দিয়ে শ্রমিক আন্দোলন করিয়ে করানো হয়েছে। ফ্রান্সেও শ্রমিকরা করেছিল, উচ্চশিক্ষিত ব্যক্তিত্বরা ছিল বলেই এই বিপ্লব হয়েছিল।

আমাদের এখানেও শ্রমিক আন্দোলন আছে। কিন্তু আমাদের দেশে শ্রমিকরা এখনও ততটা সজাগ হয়নি। সজাগ আমরা করতে পারিনি। কাজেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধোরের জন্য আমাদের এই মধ্যবিত্ত সমাজের যারা আছে শিক্ষিত ব্যক্তিত্ব, ছাত্র সমাজ, যুব সমাজ আপনারা যারা আজকে এসে বক্তৃতা শুনছেন তাদেরকে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করতে হবে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় যেতে হবে। এছাড়া আমাদের অন্য কোনও পথ নেই।

তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্র বাদ দিলে যে রাহাজানিটা হবে  সেটা থামানোর জন্য এখনও আমাদের দেশে সে রকম শ্রমিক আন্দোলন গড়ে ওঠেনি। কাজেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হলে আমাদের প্রত্যেককে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং আমরা এখানে গণতন্ত্রের জন্য এসেছি, গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চাই। এটা যদি আমাদের সবাইকে উপলব্ধি করানো যায় এবং আমরা সবাই যদি আন্তরিক হই, সরকার যদি একটু যত্নবান হয় এবং সত্যবাদী হয়, গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা থাকে সরকারকে সরানো কষ্টসাধ্য না।

জমির উদ্দিন সরকার বলেন, চারটা নির্বাচনে বিএনপি কিছু করে নাই, আবার করেছেও। মানুষ ভোট দিয়েছে, কিন্তু ভোট পাইনি। বিএনপির মতো একটা পার্টি তার একজনও নির্বাচিত হবে না এটা কি বিশ্বাস করা যায়?

বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, বিএফইউজের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, মরহুম অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলীর ছেলে খন্দকার রিয়াজ হোসেন, ডিইউজের একাংশের সভাপতি শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।