বাজেট তো মানুষের জন্য না, গুটিকয় ব্যবসায়ীর জন্য: আমির খসরু

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বাজেট তো বাংলাদেশের গুটি কয়েক অলিগার্কদের (কোনও গোষ্ঠীর শাসন) জন্য। এদের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার জন্য বাজেট। বাংলাদেশের মানুষের জন্য বাজেট হওয়ার কোনও সুযোগ নাই এখানে। বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের পকেট থেকে অলিগার্করা চুরি করবে এবং তারা শুধু বিজনেস পলিসি চালাচ্ছে না, তারা পুরো দেশ চালাচ্ছে৷’

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানকে সামনে রেখে জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটিই তার প্রথম বাজেট ঘোষণা। টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠনের পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নতুন সরকারের প্রথম বাজেট এটি।

বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে আমির খসরু মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বাজেট আর কী, যেখানে একটা অনির্বাচিত সরকার, যাদের কোনও ম্যান্ডেট নাই বাজেট দেওয়ার। কারণ তারা কোনও নির্বাচিত সরকার না, এই ব্যাপারে কারও মনে কোনও সন্দেহ নাই। আর বাজেট দেয় কী দিয়ে? একটা দেশের রিসোর্সের ওপর ভিত্তি করেই তো বাজেট দেওয়া হয়। বাংলাদেশের বর্তমান রিসোর্স কী আছে? ব্যাংক খালি,  বাংলাদেশের দেনা বাড়তে বাড়তে কোন জায়গায় গিয়েছে এখন, এখানে দেনা শোধ করতে প্রিন্সিপাল এবং বাজেটের বড় একটা অংশ চলে যাচ্ছে।’

‘ব্যাংকিং সেক্টর খালি করে ফেলছে, বাংলাদেশের রিজার্ভের অবস্থা খারাপ, ফরেন কারেন্সির অবস্থা খারাপ। মানে যে রিসোর্সগুলোর ওপর ভিত্তি করে বাজেট হয়  বাংলাদেশেতো আজ সেগুলো অনুপস্থিত। একদিকে একটা অনির্বাচিত সরকার, যাদের কোনও ম্যান্ডেট নাই বাজেট দেওয়ার, অন্যদিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় তহবিল খালি করে ফেলছে চুরি, দুর্নীতি ও বিদেশে পাচারের মাধ্যমে। বাংলাদেশের তহবিল খালি, রিজার্ভ খালির পথে, তারপর ব্যাংকগুলো সব লুটপাট করে টাকা সব নিয়ে গিয়েছে, শেয়ারবাজার ধ্বংস করে দিয়েছে।’

সাবেক এই মন্ত্রী দাবি করেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট সাধারণ মানুষের উপকার নেই। এই যে সবকিছু লুটপাট করে নিয়ে যাওয়ার পরে টাকা যতটুকু আসবে সেগুলো তো সাধারণ মানুষের পকেট থেকে জোর করে নেবে। আরও বিদ্যুতের দাম বাড়াবে, আরও গ্যাসের দাম বাড়াবে, আরও পানির দাম বাড়াবে, আরও ট্যাক্স দাঁড়াবে এবং জোর করে ট্যাক্স আদায় করবে।’

‘সুতরাং এই টাকাটা আবার যাবে তাদের (জনগণ) পকেট থেকে। সুতরাং যতটুকু করবে সেটা তো সাধারণ মানুষের থেকে আদায় করবে তারা (সরকার)’ বলেন খসরু।

এ পরিস্থিতিতে আমির খসরুর পরামর্শ, ‘এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে একটা নির্বাচিত সরকার হতে হবে। একটা মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে সবার সমান সুযোগ থাকতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড রাজনীতিতে থাকতে পারে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড অর্থনীতিতে থাকতে হবে। তাহলেই জাতির প্রত্যেকটা মানুষের তার নিজের সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারবে,  রাজনীতিতে অবদান রাখতে পারবে।’