সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি শেষে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও দলটির সঙ্গে যুগপতে যুক্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। রাজধানীর আটটি পয়েন্টে অনুষ্ঠিত পদযাত্রায় মানুষের অংশগ্রহণ নিয়ে ইতিবাচক মনোভাব যুগপতে যুক্ত রাজনৈতিক দল ও জোটের। তারা মনে করে, সরকার পতনের বিক্ষোভে নেমেছে মানুষ। এরই প্রতিফলন দেখা গেছে পদযাত্রায়। প্রথম দিনের কর্মসূচি নিয়ে সন্তুষ্ট হলেও পদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে (বুধবার) নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি ও বিরোধী দলগুলো।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) বিএনপি ও একাধিক বিরোধী দলের প্রধানদের সঙ্গে আলাপকালে এসব বিষয় উঠে আসে। নেতারা এও মনে করেন, কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাইরে দুই জনের মৃত্যু, চট্টগ্রাম, লক্ষ্মীপুর, রংপুরে হামলা, রাজধানীতে সংঘর্ষের ঘটনা অস্বাভাবিক। মঙ্গলবার দিনব্যাপী সারা দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আচরণকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি নেতাদের কেউ কেউ এর পেছনে ‘রহস্যের’ সন্ধান করছেন।
বিএনপির নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এসব ঘটনায় সরকারের লোকেরা যুক্ত। কোনও কোনও নেতা ‘কর্মসূচিকে স্যাবোটাজ’ করতে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলেও মত দিয়েছেন।
‘এসব ঘটনাকে এখন এড়ানো যাবে না’, বলে মত দিয়েছেন স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য।
মঙ্গলবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পদযাত্রায় সাধারণ মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ হয়েছে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ রকম (মিরপুরে সংঘর্ষ) কত কিছু ঘটে…।’
পদযাত্রা খুব ভালো হয়েছে, বলে প্রতিক্রিয়া দেন গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেন, ‘আগামীকাল বুধবার পদযাত্রার দ্বিতীয় দিন।’
এ প্রসঙ্গে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আজ পূর্ব ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চের চট্টগ্রাম ও রংপুর জেলার কর্মসূচিতে হামলা এবং দেশব্যাপী বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের কর্মসূচিতে হামলা চালিয়ে অন্ততপক্ষে ২ জনকে হত্যা ও অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। এসব হামলার ঘটনায় এই সরকারের ফ্যাসিবাদী চেহারা যেমন আবারও উন্মুক্ত করেছে, তেমনই সরকার যে নার্ভাস হয়ে পড়েছে, তারও প্রকাশ ঘটিয়েছে।’
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের প্রথম দফা কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন বুধবার। এদিন রাজধানীতে মঙ্গলবারের মতো দিনব্যাপী পদযাত্রা হবে। এতে বিএনপি ও দলটির সঙ্গে যুগপতে যুক্ত দলগুলোও অংশগ্রহণ করবে। তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যাবেন দিনাজপুরে। রাজধানীতে দলের বক্তব্য তুলে ধরবেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বিএনপি ও বিরোধী দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় বুধবারের পদযাত্রার সমাপনী শেষে নতুন কী কর্মসূচি আসবে, সে সম্পর্কে বিএনপির পক্ষ থেকে বিরোধী দলগুলোকে জানানো হয়নি। তারা অনেকে আশা করছেন, বুধবার সকাল নাগাদ নতুন কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের একাধিক শীর্ষ পর্যায়ের নেতা জানান, নতুন কর্মসূচি ঢাকাকেন্দ্রিক হবে। গণমিছিল, সমাবেশ, বিক্ষোভের নতুন কর্মসূচি আসতে পারে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২২ জুলাই আমাদের তারুণ্যের সমাবেশের কর্মসূচি আছে। নতুন কর্মসূচিও আসবে।’
এ বিষয়ে এখনও (মঙ্গলবার রাত ৯টা) কোনও আলোচনা হয়নি বলে জানান মাহমুদুর রহমান মান্না।
জানতে চাইলে গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা আজ রাতে বা কালকে সকালে আলোচনা করবো। অবস্থান, গণমিছিল, সমাবেশ প্রভৃতি ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে।’