সরকার পতনের এক দফার আন্দোলন ছাত্র সমাজের নয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, সরকার পতনের এক দফা দাবি ক্ষমতালিপ্সু বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্রকারীদের। আওয়ামী লীগ এরইমধ্যে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের পাড়ায়-মহল্লায় কঠিন প্রতিরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি ও সব হত্যা, সহিংসতার দায় আন্দোলনকারী নেতৃত্বকেই নিতে হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করবেন না, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করবেন না। আমরা সংঘাত চাই না, শান্তি চাই। সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।’
রবিবার (৪ আগস্ট) বিকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রবিবার যারা সহিংসতা করেছে তারা শিক্ষার্থী নয়, বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-ছাত্রশিবির ও জঙ্গি গোষ্ঠীর ক্যাডার বাহিনী, দাবি করে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাই—এই সন্ত্রাসীদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। আপনাদের সন্তানদের ঘরে রাখুন। যারা রাস্তায় আছে, তাদের ঘরে ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করছি।’
ছাত্রসমাজের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ছাত্রসমাজের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রধানমন্ত্রী গণভবনের দরজা উন্মুক্ত রেখেছেন। সরকার তাদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু ছাত্রসমাজের কাঁধে বন্দুক রেখে সরকারকে হটিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র দেশের কৃষক-শ্রমিক-ছাত্র-আপামর জনগণ মেনে নেবে না।’
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমরা শেষ কথা বলতে চাই, বিএনপি-জামায়াত, শিবির-জঙ্গিগোষ্ঠীর নির্দেশে… আমরা এই দেশমাতৃকাকে ভালোবেসে ধৈর্যের শেষ সীমা পর্যন্ত পৌঁছে গেছি। ধৈর্য, সহনশীলতাকে দুর্বলতা ভাববেন না। এই জঙ্গিগোষ্ঠীকে প্রতিরোধ করার জন্য আমরা দেশবাসীকে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দাবি মেনে নেওয়ার পরও আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘কোটা নিয়ে আদালতে চূড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদের ধৈর্যধারণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী বারবার আহ্বান জানান। পরে সরকারের আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেন এবং কোটা নিয়ে ছাত্রসমাজের দাবি ছিল, তার চেয়েও বেশি পূরণ হয়।’
শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণ হওয়ার পরও বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-ছাত্রশিবির সহিংসতা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে উল্লেখ করে নানক বলেন, ‘গণতন্ত্র, সংবিধান ও জান-মালের নিরাপত্তার জন্য আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আপনারা দেখেছেন, আজ সকালে এই সন্ত্রাসীরা বিনা কারণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কেও রেহাই দেয়নি। তারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ঢাকার সিএমএম আদালতে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। হাসপাতালে মানবতাবিরোধী এই হামলা দিয়েই প্রমাণিত হয়, তারা শিক্ষার্থী নয়। আজকে যারা সহিংসতা করেছে তারা শিক্ষার্থী না।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।