আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সম্পদ নয়, তিনি জাতীয় সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী। জাতিকে শেখ হাসিনার জন্য প্রাচীর গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত এই নেতা।
বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ সব কথা বলে।
আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, অনিশ্চয়তার অন্ধকার ও দিশেহারার আবর্তে যখন বাংলাদেশ আবর্তিত, তখনই শেখ হাসিনার আগমন। অনেক সংগ্রাম, অনেক রক্ত বিসর্জন, অনেক আত্মদান, কালবৈশাখী, মরুঝড় মোকাবিলা করে তার আজকের অবস্থান। গভীর দুঃখ, বেদনা, যন্ত্রণা নিয়ে বলতেই হচ্ছে— তার কৃতি ম্লান করছে কিছু লোভী, স্বার্থপর ও সুযোগ সন্ধানী। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সম্পদ নয়, বরং জাতীয় সম্পদ। সম্মান, গৌরব, অহংকার বাঙালির পরিচয়। তাকে প্রলয়াবর্তে নিক্ষেপ করলে জাতি আবার অন্ধকারে নিক্ষিপ্ত হবে। দিশেহারা ও পথহারা হয়ে পড়বে। জাতিকে আহ্বান জানাবো— জাতীয় প্রয়োজনে দেশরত্ন শেখ হাসিনার জন্য প্রাচীর গড়ে তুলুন। জনপ্রাচীরের চেয়ে মজবুত ও নিরাপদ প্রাচীর আর হয় না।
তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়নের নামে আমরা যেসব কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছি, তার জন্য আমাদের জনপরিষদ প্রস্তুত নয়। সে জন্য এসব কর্মকাণ্ড টেকসই নয়, দেশের এসব উন্নয়ন জনদুর্গতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উদপাদন করেও সে কারণে আজ জনদুর্ভোগ মেটানো যাচ্ছে না। কারণ খুব স্পষ্ট, যাদেরকে জনগণের সেবার দায়িত্ব দেওয়া হয়, তারা ব্যক্তি স্বার্থ ও দুর্নীতিতে দুষ্ট। রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধির চরিত্র এক ও অভিন্ন হয়ে দেখা যাচ্ছে।
বাজেটের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি নিয়ে ভিন্নমত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাজেট নিয়ে স্বতন্ত্র সদস্যরা এত কথা বলছেন, তা কি মন্ত্রণালয় শুনছে, না। ভি আর আম্বেদকার ভারতের সংবিধান প্রণেতা। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি তিনি বলেছিলেন, যেখানে গণতন্ত্র অনুশীলনে দীর্ঘদিন স্থবিরতায় পড়ে গেছে, সেখানে গণতন্ত্র একনায়কতন্ত্রে পরিণত হতে পারে। আকারে-প্রকারে গণতন্ত্রের ঠাটবাট বজায় রইলো। কিন্তু কার্যক্রমে ও শাসনে তা একনায়কতন্ত্রে পরিণত। রাজনীতিতে ব্যক্তি পূজা নিশ্চিতভাবে স্বৈরতন্ত্রের রাজপথ ধরে হাটার শামিল। রাজনীতি আজ অর্থশক্তি, পেশী শক্তির কবলে। জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরাই বিপুল সংখ্যক। আর পেশীশক্তি ও অর্থশক্তি ব্যবসায়ীদের করায়াত্ত।