বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতিসত্তার এক অবিচ্ছেদ্য নাম। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি। দেশ ও বিদেশের সর্বস্তরের পাঠকের মনে তাঁকে জানার আগ্রহ বেড়েই চলছে। এই জানার আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে শতাধিক বই প্রকাশ করেছে বাংলা একাডেমি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে ৯৬টি, বাকি ছয়টি নিয়মিত প্রকাশনার অংশ।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু গবেষক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলা একাডেমির প্রকাশিত বইগুলোর বেশ কয়েকটি আমি দেখেছি। বইগুলো খুবই উন্নত মানের। তবে বইগুলো আরও সম্পাদনা করা দরকার ছিল।’
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে পাঠ বিশ্লেষণ ক্যাটাগরিতে রয়েছে তিনটি বই— বাংলা একাডেমির বর্তমান মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা সম্পাদিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী: পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘আমার দেখা নয়া চীন: পাঠ বিশ্লেষণ’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা: পাঠ-বিশ্লেষণ’।
এছাড়া সম্পাদিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে— মো. নুরুল হুদা সম্পাদিত ‘আগস্ট ২০২১: শোক থেকে শক্তি, শক্তি থেকে জাগরণ’, শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু: নানা বর্ণে নানা রেখায়’, হাবিবুল্লাহ সিরাজী ও অন্যান্য সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা’, হাবিবুল্লা সিরাজের সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত গল্প’, প্রথম খণ্ড’, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত ছড়া’ প্রথম খণ্ড, মোহাম্মদ নুরুল হুদা সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত ছড়া’ দ্বিতীয় খণ্ড, শামসুজ্জামান খান সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ বহুমাত্রিক বিশ্লেষণ’, মিনার মনসুর ও দিলওয়ার চৌধুরী সম্পাদিত ‘শেখ মুজিব একটি লাল গোলাপ’, শেখ হাসিনা সম্পাদিত ‘শেখ মুজিবুর রহমান’ রচনাবলির প্রথম খণ্ড ও দ্বিতীয় খণ্ড এবং শেখ হাসিনা সম্পাদিত ‘কালেক্টেড ওয়ার্কস্ অব শেখ মুজিবুর রহমান’ ভলিউম-২, মাহমুদুল হক সম্পাদিত ‘চট্টগ্রামে শেখ মুজিব’।
মৌলিক গ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের লেখা বই ‘আমার দেখা নয়াচীন’, মিল্টন বিশ্বাসের উপন্যাস ‘বঙ্গবন্ধু’, মোজাম্মেল হক নিয়োগীর ‘কিশোরগঞ্জে বঙ্গবন্ধু’, বিভূতিভূষণ মণ্ডলের ‘খুলনায় বঙ্গবন্ধু’, আনোয়ার শহীদ হকের ‘ছোটদের বঙ্গমাতা’, শাহজাহান কিবরিয়ার ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’, মোহাম্মদ আলী খানের ‘ডাক টিকিট ও মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু’, মহসিন হোসাইনের ‘নড়াইলে বঙ্গবন্ধু’, রঞ্জনা বিশ্বাসের ‘নারী পুনর্বাসনে বঙ্গবন্ধু’, আরজু মন্দ আরমানুর ‘ছোটগল্পে বঙ্গবন্ধু’, এম আব্দুল আলিমের ‘ পাবনা জেলায় বঙ্গবন্ধু’, মোশারফ হোসেনের ‘প্রাকৃতিক ও মানবিক বিপর্যয়ে বঙ্গবন্ধু’, হরিদাস ঠাকুরের ‘বঙ্গবন্ধু উত্তরণের অভিযাত্রা’, জালাল ফিরোজের ‘বঙ্গবন্ধু গণপরিষদ সংবিধান’, আবু মো. দেলোয়ার হোসেনের ‘বঙ্গবন্ধু বিষয়ক গ্রন্থপঞ্জি’, মোশারফ হোসেনের ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’, আবু সাঈদ খানের ‘বঙ্গবন্ধু মুক্তি সংগ্রাম ও বাংলাদেশ রাষ্ট্র’, দিব্যদ্যুতি সরকারের ‘বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন’।
স্বপন কুমার বিশ্বাসের ‘বঙ্গবন্ধুর সংসার জীবন’, সরকার আব্দুল মান্নানের ‘বঙ্গবন্ধু স্বপ্নের চেয়ে বড়’, হালিমদার খানের ‘বঙ্গবন্ধু: প্রতিবাদ প্রতিরোধ’, সৌমিত্র শেখরের ‘বঙ্গবন্ধু :আদর্শের সুবর্ণরেখা’, অসীম কুমার সাহার ‘বঙ্গবন্ধু চেতনার বাতিঘর’, অনুপম হাসানের ‘বঙ্গবন্ধু: বাকশাল ও জাতীয় সংহতি’, খোরশেদ বাহারের ‘বঙ্গমাতা: ইতিহাসে নির্মিত সৈনিক’, সুভাষ সিংহ রায়ের ‘বঙ্গবন্ধু ও সাম্প্রদায়িকতা’, আবুল কাসেমের ‘বঙ্গবন্ধু ও চা শিল্প’, অনুপম হায়াতের ‘বঙ্গবন্ধুর চলচ্চিত্র’, নুরুল ইসলাম খানের ‘বঙ্গবন্ধু ও তিমির রাতের স্মৃতি’, মোহাম্মদ শরীফের ‘বঙ্গবন্ধু ও পঞ্চাশের দশকের রাজনীতি’, তানভীর আহমেদ ‘সিডনির বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি চেতনা’, স্বরোচিষ সরকারের ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলা ভাষা’, মো. হাসান কবিরের ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের কৃষি’, এম আব্দুল আলীমের ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’, রফিকুর রশীদের ‘বঙ্গবন্ধু ও মুজিবনগর’, অরুণ কুমার গোস্বামীর ‘বঙ্গবন্ধুর সার্বভৌমত্ব অর্জনের সংগ্রাম’, কামরুল হকের ‘বঙ্গবন্ধু ও সংবাদপত্র: ছয় দফা থেকে গণঅভ্যুত্থান’।
স্বপন দেবের ‘বঙ্গবন্ধু ও ১৫ই আগস্ট প্রসঙ্গ’, আবুল কাশেমের ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়নদর্শন: জাতীয়করণনীতি এবং পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনা’, অজয় দাশগুপ্তের ‘বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন কৌশল ও হরতাল’, দিলরুবা নীলার ‘বঙ্গবন্ধুর কর্ম চিন্তা’, হারুন অর রশিদের ‘বঙ্গবন্ধুর দ্বিতীয় বিপ্লব: কী ও কেন?’, সুব্রত বড়ুয়ার ‘বঙ্গবন্ধুর জীবন কথা’, বীরেন মুখার্জির ‘বঙ্গবন্ধু নামে প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা’, মো. সেলিমের ‘বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি’, আবুল মামুনের ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু’, সৈয়দ শামসুল হকের ‘বঙ্গবন্ধুর বীরগাথা’, শ্যামল কান্তি দে’র ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষাশৈলী’, আতিউর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক অর্থনীতি’, মাসুদ রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু সফরনামা’, সমীর কুমার বিশ্বাসের ‘বঙ্গবন্ধুর সমবায় ভাবনা’, সাজেদুল আউয়ালের ‘বঙ্গবন্ধুর সংস্কৃতি ভাবনা’, জালাল ফিরোজের ‘বঙ্গবন্ধুর পত্রাবলী’, সাহেদ মন্তাজের ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বঙ্গবন্ধু’, রিয়াজ আহমেদের ‘বেগম ফজিলাতুন্ নেছা মুজিব’, ‘মাহফুজুর রহমানের ‘বীমা খাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান’, চৌধুরী অধীরের ‘ভারতীয় গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড’, বিশ্বজিৎ ঘোষের ‘মুজিব মঙ্গল’, সরকার আব্দুল মান্নানের ‘মুজিব-মানিক-সোহরাওয়ার্দী সম্পর্কের আলোয়’।
ফজল-এ-খোদার ‘মুজিবের নাম জয় বাংলা’, পিয়াস মজিদের ‘মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলা একাডেমি’, নফল আলম লেনিনের ‘রাজনীতিতে হাতে খড়ি ও কলকাতায় শেখ মুজিব’, নাসিমা বেগমের ‘রেনু থেকে বঙ্গমাতা’, সাইমন জাকারিয়ার ‘লোকায়ত সাহিত্য সংগীতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’, মো. মোজাম্মেল হকের ‘শত ভাস্কর্য ও মুর্যালে বঙ্গবন্ধু’, ইমরুল ইউসুফের শেখ ‘লুৎফুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু: পিতা পুত্র পরম্পরা’, খালেক বিন জয়নুদ্দিনের ‘সাকিন টুঙ্গিপাড়া’, সাইমন জাকারিয়ার ‘সাধক কবিদের রচনায় বঙ্গবন্ধুর জীবন ও রাজনীতি’, আমিনুর রহমান সুলতানের ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধে বঙ্গবন্ধু’, আসাদ চৌধুরীর ‘সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু’, মুর্শিদা বিনতে রহমানের ‘স্বাধীনতার পথে বঙ্গবন্ধু: পরিপ্রেক্ষিত ১৯৭০-এর নির্বাচন’, শিরিন আক্তারের ‘৭ই মার্চের ভাষণ: একটি জাতির কথা বলা’, হারুন-অর-রশিদের ‘সাতই মার্চের ভাষণ কেন বিশ্ব ঐতিহ্য সম্পদ: বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ’।
বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে— নুরুন নবীর ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড টারবুলেন্ট বাংলাদেশ’, আব্দুল মান্নানের ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড দ্য চেঞ্জিং ফোর্স অব বাংলাদেশ’, সুরেশ রঞ্জন বসাকের ‘বঙ্গবন্ধু ইন বেঙ্গলি পোয়েট্রি’, অদিতি ফাল্গুনী গায়েনের ‘বঙ্গবন্ধু দ্য ফেইরি ইয়াং ম্যান ফ্রম দ্য মধুমতি বেসিন’, ফখরুল আলম সম্পাদিত ‘বালাদ অব আওয়ার হিরো বঙ্গবন্ধু’, নিউ চায়না- ১৯৫২’ এবং রশিদ আসকারির ‘দ্য মেকিং অব মুজিব’।
জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বাংলা একাডেমির নিয়মিত প্রকাশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে— সাহিদা বেগমের ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা: প্রাসঙ্গিক দলিলপত্র’, হারুন অর রশিদের ‘আমাদের বাঁচার দাবি: ছয় দফার ৫০ বছর’, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজের লেখা ‘কারাগারের রোজনামচা’, ‘মোনায়েম সরকার ও অন্যান্য সম্পাদিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন ও রাজনীতি’ প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড। ফখরুল আলমের ইংরেজি অনুবাদ ‘প্রিজন ডায়েরিজ’।
বাংলা একাডেমির বিক্রয় ও বিপণন উপবিভাগের উৎপাদন কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে লেখা বইগুলোর পাঠক মোটামুটি ভালোই। এরমধ্যে পাঠ বিশ্লেষণ ও সম্পাদিত বইগুলোর বিষয়ে পাঠকের আগ্রহ তুলনামূলক বেশি।’