স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম নির্বাসিত কবি, লেখক ও কলামিস্ট দাউদ হায়দার মারা গেছেন। শনিবার রাতে জার্মানির বার্লিনের একটি বৃদ্ধাশ্রমে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। লন্ডন প্রবাসী নাট্যশিল্পী ও সংগঠক স্বাধীন খছরু বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নায় কালো বন্যায়’ নামে একটি কবিতার জন্য ১৯৭৩ সালে কবিকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৭৪ এর ২০ মে সন্ধ্যায় জেল থেকে মুক্তি দিয়ে পরদিন কলকাতাগামী একটি বিশেষ ফ্লাইটে তুলে দেওয়া হয় তাকে। ওই ফ্লাইটে আর কোনও যাত্রী ছিল না। তারপর ভারত সরকারও তাকে বহিষ্কার করে। নোবেল লরিয়েট জার্মান সাহিত্যিক গুন্টার গ্রাসের বিশেষ চেষ্টায় ১৯৮৭ সালে জার্মানিতে আশ্রয় নেন দাউদ হায়দার।
গত বছর বার্লিনের নয়াকোলনের একটি হাসপাতালে ভর্তি হন কবি। সে সময় বার্লিনের স্থানীয় পুলিশের অপরাধ দমন বিভাগ জানায়, কবি দাউদ হায়দারকে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
চিরকুমার দাউদ হায়দারের আগে থেকেই একাকিত্বসহ বয়সজনিত নানা জটিলতা ছিল। দীর্ঘদিন তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
দাউদ হায়দারের জন্ম ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পাবনায় জেলায়। তিনি বর্তমানে একজন ব্রডকাস্টিং সাংবাদিক ছিলেন। তিনি বাংলা ভাষার একজন আধুনিক কবি, যিনি সত্তর দশকের অন্যতম প্রধান কবি হিসেবে পরিচিত। তার একটি বিখ্যাত কাব্যের নাম ‘জন্মই আমার আজন্ম পাপ’। সত্তর দশকের শুরুর দিকে দাউদ হায়দার দৈনিক সংবাদের সাহিত্য পাতার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৩ সালে লন্ডন সোসাইটি ফর পোয়েট্রি দাউদ হায়দারের কোনও এক কবিতাকে ‘দ্য বেস্ট পোয়েম অব এশিয়া’ সম্মানে ভূষিত করে। সর্বশেষ তিনি বাংলা ট্রিবিউনে নিয়মিত কলাম লিখতেন।