রাজধানীর বনানীতে বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ (২৪) হত্যা মামলায় সন্দেহভাজন তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছে বনানী থানা-পুলিশ। রবিবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তবে তারা কেউ মামলার এজাহারনামীয় আসামি নন।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন— আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯) এবং আল আমিন সানি (১৯)।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও সাক্ষীদের বক্তব্যে হত্যাকাণ্ডের সময় ঘটনাস্থলে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা মামলার ২ নম্বর আসামিকে মোবাইল মেসেজ ও ফোনের মাধ্যমে ঘটনাস্থলে ডেকে এনেছিল বলে প্রমাণ মিলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আল কামাল শেখ বিটিসিএল কলোনিতে বসবাস করেন এবং তার গ্রামের বাড়ি খুলনার তেরখাদা উপজেলার বিলদুড়িয়ার শেখপাড়ায়। আলভী হোসেন জুনায়েদ বনানী মসজিদ গলিতে থাকেন, তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলের দক্ষিণ জাহাঙ্গীরপুরে। আর আল আমিন সানি থাকেন মহাখালীর ওয়ারলেস গেট এলাকায়, গ্রামের বাড়ি জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায়।
গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। ওসি রাসেল সারোয়ার বলেন, গ্রেফতার ব্যক্তিরা মামলার অন্যান্য এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত আসামিদের পরিচয় এবং অবস্থান সম্পর্কেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ চলমান মিডটার্ম পরীক্ষা শেষে শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৩টার দিকে বন্ধুদের সঙ্গে র্যানকন বিল্ডিংয়ের সামনে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় ইউনিভার্সিটি অব স্কলারসের দুই ছাত্রী পাশেই ছিলেন।
তাদের নিয়ে হাসাহাসি হয়েছে কিনা, এ নিয়ে মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০) ও মাহাথির হাসান (২০) নামে তিন জন এসে পারভেজের সঙ্গে তর্কে জড়ান। সিসিটিভি ফুটেজে এ ঘটনার চিত্র দেখা যায়। শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের বাইরে ফের হামলার শিকার হন পারভেজ। ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় পারভেজের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় আট জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আসামিরা হলেন– মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জহর গিফফারি পিয়াস (২০), মো. মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজি (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। এছাড়া আরও ২৫-৩০ জন অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।