৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম, দাবি না মানলে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’

আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কোনও ঘোষণা না এলে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন দেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত এক মহাসমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন। এসময় ৬ দফা দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে তারা স্লোগান দেন।

সমাবেশে বক্তারা জানান, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে থাকা ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের প্রমোশন সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল, পদবি পরিবর্তন এবং সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করার দাবিতে তারা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন। ৮ মাস ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চললেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা। 

পলিটেকনিক ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মিজানুর রহমান বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি আমাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেওয়ার কোনও ঘোষণা না আসে, তাহলে আমরা সারা দেশ থেকে ঢাকায় লং মার্চ করবো।’

শিক্ষার্থীরা যানজট ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করতে চান না জানিয়ে বলেন, দাবি আদায়ে প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। 

সমাবেশে কুমিল্লায় পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলারও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

এর আগে, আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) কাফনের কাপড় মাথায় বেঁধে মিছিল ও শনিবার (১৯ এপ্রিল) ‘রাইজ ইন রেড’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গত বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড় অবরোধ করে আন্দোলন চালান। তবে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় শিক্ষার্থীরা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের ৬ দফা দাবি—

১। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের প্রমোশনের রায় বাতিল ও সংশ্লিষ্টদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা। পাশাপাশি বিতর্কিত নিয়োগবিধি বাতিল ও সংশোধন করতে হবে।

২। ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনও বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল এবং চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করে তা পর্যায়ক্রমে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে চালু করতে হবে।

৩। উপ-সহকারী প্রকৌশলী (১০ম গ্রেড) পদ সংরক্ষণের বিধান বাস্তবায়ন এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবমূল্যায়ন বন্ধ করতে হবে।

৪। কারিগরি শিক্ষায় প্রশাসনিক পদে অকারিগরি জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ এবং কারিগরি শিক্ষিত জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি শূন্য পদে শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগ দিতে হবে।

৫। স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয়’ প্রতিষ্ঠা এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।

৬। পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষে উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন ও নতুন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলোতে ভর্তি কার্যক্রম চালু করতে হবে।