সারা দেশে রেল ব্লকেডের ডাক দিয়ে সড়ক ছাড়লেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

ছয় দফা দাবি আদায়ে সারা দেশে ‘রেল ব্লকেড’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে এক সমাবেশে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের প্রতিনিধি জুবায়ের পাটোয়ারী। প্রায় আট ঘণ্টা অবরোধ শেষে সড়ক ছেড়ে দেন আন্দোলনকারীরা।

জুবায়ের পাটোয়ারী জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক হয়েছে। তবে দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে লিখিত আশ্বাস না পাওয়ায় তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তিনি বলেন, বৈঠকে দাবি বাস্তবায়নের কোনও লিখিত নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। এমনকি কুমিল্লা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার কোনও প্রতিকারও হয়নি। তাই বৃহস্পতিবার সারা দেশে রেল ও সড়কপথ অবরোধের ঘোষণা দেওয়া হলো।

সকাল থেকেই অবরোধ, দুর্ভোগে নগরবাসী

এর আগে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়সহ শিল্পাঞ্চল এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন। এতে ওইসব এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। আন্দোলনে মহিলা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি!

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো–

১. ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অনিয়মিত নিয়োগ ও প্রমোশন বাতিল: জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ কোটা বাতিল, অবৈধ পদোন্নতির হাইকোর্টের রায় কার্যকর, বিতর্কিত নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সংশ্লিষ্টদের বরখাস্ত করতে হবে।

২. ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মানোন্নয়ন: বয়সভিত্তিক ভর্তি বাতিল, চার বছর মেয়াদি আন্তর্জাতিক মানের কারিকুলাম চালু ও পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করতে হবে।

৩. ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ: সংরক্ষিত কোটা থাকা সত্ত্বেও যেসব প্রতিষ্ঠান নিম্ন পদে নিয়োগ দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

৪. কারিগরি সেক্টরে অদক্ষ জনবল নিয়োগে নিষেধাজ্ঞা: পরিচালক থেকে অধ্যক্ষ পর্যন্ত সব পদে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও শূন্য পদে দক্ষ জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

৫. স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় ও সংস্কার কমিশন গঠন: ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ নামে একটি স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় এবং ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।

৬. উচ্চশিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ: একটি পূর্ণাঙ্গ টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পলিটেকনিক পাস শিক্ষার্থীদের জন্য ভর্তি নিশ্চিত করতে হবে।

উল্লেখ্য, কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক কিছু ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা বলছেন, শুধু বক্তব্যে কাজ হবে না, প্রয়োজন বাস্তবায়ন ও লিখিত প্রতিশ্রুতি।