রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা এলাকায় ‘আপন কফি হাউজ’ নামে একটি কফিশপের সামনে মারধরের শিকার লামিয়া আক্তারের (১৪) মানসিক সমস্যা রয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, গত ১১ এপ্রিল কিশোরী লামিয়া আক্তার খাবার খাওয়ার জন্য কফিশপে গিয়েছিল। তার মানসিক সমস্যা থাকায় দোকানের কাস্টমারদের কাছ থেকে খাবার চাইছিল। এসব দেখে দোকানের কর্মচারীরা কিশোরী লামিয়াকে দোকানের বাইরে বের করে দেয়। এক পর্যায় তাকে মারধর করা হয়। বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আতাউর রহমান আকন্দ।
কিশোরীকে মারধরের ঘটনাটি সোমবার (১৪ এপ্রিল) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই দোকানের মালিকসহ তিন জনকে আটক করা হয়। পরে মালিক জিয়াউর রহমান অসুস্থ থাকায় তাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয় পুলিশ। ওই সময় ভুক্তভোগী কিশোরীর খোঁজ না মেলায় সোমবার রাতেই পুলিশ বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। সেই মামলায় কফিশপের ম্যানেজার আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে গ্রেফতার দেখিয়ে পরদিন মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আদালতে পাঠানো হয়।
ওসি আতাউর রহমান আকন্দ বলেন, ভুক্তভোগী তরুণীর খোঁজ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে পরিবারসহ ভুক্তভোগী কিশোরী থানায় এসেছিল। কিশোরীর মানসিক সমস্যা রয়েছে। সেদিনের ঘটনায় পরিবারের সামনেই কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আজ ঘটনা সম্পর্কে জবানবন্দির জন্য ভুক্তভোগীকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে কিশোরী জবানবন্দি দিয়েছে।
ওসি আতাউর রহমান বলেন, গত ১১ এপ্রিল কিশোরী লামিয়া আক্তার (১৪) খাবার খেতে আপন কফিশপে যায়। সেখানে তিনি কয়েকজন কাস্টমারের কাছে খাবার চেয়েছিল। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কফিশপটির ম্যানেজার আলামিন তাকে লাঠি দিয়ে পেটান। তখন তরুণী খোঁড়াতে খোঁড়াতে সেখান থেকে চলে যান। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিশোরীকে মারধরের ভিডিও নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আপন কফিশপে অভিযান চালিয়ে ম্যানেজার আল আমিন ও কর্মচারী শুভ সূত্রধরকে আটক করে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
তরুণীকে মারধরের বিষয়ে ওসি বলেন, কফিশপের দুজন জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছেন— ওই তরুণী কফিশপে ঢুকে গ্রাহকদের বিরক্ত করতেন।
জানা যায়, কিশোরী লামিয়া আক্তারের বাবার নাম মো. মামুন। তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে লামিয়া দ্বিতীয়। তার বাবা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। কিশোরী লামিয়া আক্তার ঢাকার মুগদা এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন।