বাংলা ট্রিবিউনে গত ১১ এপ্রিল প্রকাশিত ‘আইএস-আল কায়েদার পতাকা নিয়ে মিছিল, ক্ষুণ্ন হচ্ছে ভাবমূর্তি’ শীর্ষক প্রতিবেদনের একটি অংশের প্রতিবাদ করেছেন সৈয়দ মো. জিয়াউল হক। গত ১৩ এপ্রিল এক ই-মেইল বার্তার মাধ্যমে তিনি এই প্রতিবাদ জানান। প্রতিবাদে সৈয়দ মো: জিয়াউল হক বলেছেন, ‘প্রতিবেদনে তাকে যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা একতরফা, ভিত্তিহীন এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত।’
জিয়া বলেন, ‘এই প্রতিবেদনে আমাকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিম/ আনসার আল-ইসলাম- এর একজন নেতা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা আসলে পূর্ববর্তী তাবেদার সরকারের এমন কিছু কর্মকর্তার অলীক অভিযোগকে প্রতিষ্ঠিত সত্য হিসেবে তুলে ধরার প্রয়াস, যারা গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার জন্য কুখ্যাত এবং যাদের অনেকেই বর্তমানে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’
প্রতিবাদপত্রে জিয়া বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে জানাচ্ছি যে, আমি কোনও চরমপন্থী সংগঠনের সঙ্গে কোনও ধরনের সম্পৃক্ততা বা সংশ্লিষ্টতা কখনোই রাখিনি। ইসলাম ধর্মে চরমপন্থার কোনও স্থান নেই। এ সব অভিযোগ পূর্ববর্তী তাবেদার সরকার দ্বারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছড়ানো হয়েছে এবং বর্তমান সরকারের অধীনে এখনও আইনি যাচাই-বাছাইতে রয়েছে।’
জিয়া বলেন, ‘বিগত ভারতীয় প্রক্সি শাসনের সময় এদেশে বিচারকদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে রায় লেখানোর ঘটনাও ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে। তাই, ফ্যাসিবাদ পরবর্তী সময়ের কোনও একটি আদালতের রায় ছাড়া এ ধরনের অভিযোগকে চূড়ান্ত সত্য হিসেবে উপস্থাপন করা নৈতিকভাবে অগ্রহণযোগ্য এবং পূর্ববর্তী ভারতীয় তাবেদার সরকারের পক্ষে কাজ করার শামিল।’
প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ‘আল-জাজিরার অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরকে দেওয়া ইন্টারভিউতে সব বিষয়ে আলাদা পর্বে প্রায় এক ঘণ্টার বিস্তারিত আলোচনা করেছি। সত্যান্বেষী ব্যক্তিরা ইন্টারভিউটি সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়েরের ইউটিউব পেইজে দেখে নিতে পারেন। ভারতীয় আধিপত্যবাদকে এবং দিল্লির ক্রীতদাসী শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশকে ভারতের পদতলে সপে দিয়েছিলেন, সেই বাস্তবতাকে হালকাভাবে দেখানোর অপপ্রয়াস। এ ধরনের মনোভাবই এদেশে জালিম হাসিনাশাহীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে এবং ভারতীয় আগ্রাসনকে বাস্তবে সম্ভব করেছে।’
প্রতিবাদলিপিতে তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবেদনের বরাত দেওয়া হয়েছে অজানা এক সূত্রকে, যার নিজের আসল পরিচয়ে বক্তব্য দেওয়ার সৎ সাহস নেই। এ থেকে ধারণা করা যায় যে, এই সূত্র হয়তো বানোয়াট নতুবা বিগত সরকারের সময়ের গুম-খুনে পারদর্শী কোনও কর্মকর্তা, যিনি নিজেই এখন পলাতক। এ ধরনের সূত্রের মনগড়া বক্তব্য প্রচার করা কোনও ভালো সাংবাদিকতা নয়। ইতোমধ্যে একাধিক মিডিয়ায় আমার বক্তব্যে এসব অলীক অভিযোগ আমি নাকচ করেছি। তাই, সঠিক সাংবাদিকতার দাবি হিসেবে বাংলা ট্রিবিউনের উচিত ছিল, কথিত সেই সূত্র থেকে আমার বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ সংগ্রহ করে সেটি তুলে ধরা। কিন্তু তা না করে আমার ব্যাপারে বিগত জালিম সরকারের জঙ্গি কার্ড খেলার অপকৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে।’
প্রতিবেদকের বক্তব্য
‘আইএস-আল কায়েদার পতাকা নিয়ে মিছিল, ক্ষুণ্ন হচ্ছে দেশের ভাবমূর্তি’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত বিষয় এবং উগ্রবাদী তৎপরতা নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের বক্তব্য নিয়ে করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন কাউকে ব্যক্তিগতভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে করা হয়নি। প্রতিবেদনে প্রসঙ্গক্রমে সৈয়দ মো. জিয়াউল হকের নাম এসেছে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের পুলিশের তদন্তে তিনি অভিযুক্ত এবং আদালতের রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত। বর্তমান সরকার আগের এসব তদন্ত ও রায় যেহেতু বাতিল করেনি, সেহেতু তা এখনও কার্যকর রয়েছে বলে ধরা হয়।’