জিএম কাদেরের দুর্নীতির অনুসন্ধান করবে দুদক

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের দুর্নীতির অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। জালিয়াতির মাধ্যমে পার্টির চেয়ারম্যান পদ নেওয়া ছাড়াও বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে।

দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের (জি এম কাদের) ১৯৯৬ সাল থেকে বিভিন্ন আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন এবং সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালে তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে দুদকের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী বেশ কিছু দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি মনোনয়নে ১৮ কোটি ১০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এই অর্থ গ্রহণের মূল সুবিধাভোগী তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। চুক্তি অনুযায়ী অর্থ পরিশোধ না করায় প্রফেসর মাসুদা এম রশীদ চৌধুরীকে দলীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং তার স্থলে জিএম কাদেরের স্ত্রী শরিফা কাদের সংসদ সদস্য হন।

পদবাণিজ্য ও অর্থ পাচার

জিএম কাদের জালিয়াতির মাধ্যমে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হন এবং দলীয় পদবাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেন, যা পরে বিদেশে পাচার করা হয়। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ৩০১ সদস্যবিশিষ্ট হলেও বর্তমানে ৬০০ থেকে ৬৫০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আর্থিক সম্পদ ও স্থাবর সম্পত্তি

২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দাখিলকৃত হলফনামা অনুযায়ী জিএম কাদেরের নামে নগদ ৪৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা, ব্যাংকে ৩৫ লাখ ৯৫ হাজার টাকা এবং ৮৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।

তার স্ত্রী শরিফা কাদেরের নামে নগদ ৫৯ লাখ ৫৯ হাজার টাকা, ব্যাংকে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা এবং ৮০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জিপ গাড়ি রয়েছে।

স্থাবর সম্পদের মধ্যে লালমনিরহাট ও ঢাকায় জমি ও ফ্ল্যাট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, তিনি দেশে-বিদেশে  বিশেষ করে সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে নামে-বেনামে সম্পদ পাচার করেছেন। গোপন অনুসন্ধানে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের যথেষ্ট প্রমাণ মিলেছে। প্রকাশ্য অনুসন্ধানের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষ প্রকাশ্য অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।