সম্প্রতি গণমাধ্যমকর্মীদের ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন ডিএমপি কমিশনার। তবে এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। রবিবার (১৬ মার্চ) রাজধানী ঢাকার মানিক মিয়া এভিনিউ-এ জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে টিআইবি আয়োজিত মানববন্ধনে নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘‘ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ‘ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার না করার সুপারিশ ঘৃণিত এবং অগ্রহণযোগ্য। পুলিশকে এ ধরনের বক্তব্য পরিহার করতে হবে।’ সম্প্রতি ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং কর্তৃত্ববাদী মনোভাব সমালোচিত বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং নির্যাতনের একের পর এক ঘটনা সামনে আসছে; এই ভয়াবহ পরিস্থিতি বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করারও আহ্বান জানানো হয়েছে মানববন্ধন থেকে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দেশে নারীদের স্বাধীনতা এখনও পূর্ণতা পায়নি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও নারীরা বৈষম্যের শিকার, যা দেশের স্বাধীনতা ও বৈষম্যবিরোধী চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’ নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে সরকারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানালেও সব অংশীজনকে এতে সম্পৃক্ত করার দাবি জানান তিনি।
মানববন্ধনে অন্য বক্তারা জানান, ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অপরাধীদের দ্রুত বিচার, আইনি সংস্কার এবং নারীর অধিকারের সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপের জন্য ১১ দফা সুপারিশ পেশ করা হয়েছে। এসব সুপারিশের মধ্যে রয়েছে— নারী ও শিশু ধর্ষণসহ সব ধরনের যৌন নির্যাতন, সহিংসতা ও বৈষম্য প্রতিহত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ, অপরাধীদের দ্রুত বিচার এবং অপরাধের শিকার পরিবারকে সব ধরণের সহায়তা প্রদান করা।
এসময় টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট কোঅর্ডিনেটর সাইমুম মৌসুমী বৃষ্টি ধর্ষণসহ নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সংগঠনের ধারণাপত্র পাঠ করেন। এতে নারীর অধিকার রক্ষায় আইন সংস্কারের গুরুত্ব এবং অপরাধীকে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন— অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, নাগরিক উদ্যোগ, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, নারী ও শিশুর অধিকার রক্ষায় স্পষ্ট অবস্থান নিতে হবে এবং সকল প্রচেষ্টা একসঙ্গে মিলিয়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধ করতে হবে।