গরু-ছাগলের ব্যবসার আড়ালে অবৈধ অর্থপাচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের প্রমাণ মিলেছে সাদিক অ্যাগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে। ১৩৩ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং মামলার প্রধান আসামি ইমরান হোসেনকে (৪৩) রাজধানীর মালিবাগ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকালে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত ডিআইজি (অর্গানাইজড ক্রাইম) একরামুল হাবিব।
তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ইমরান হোসেন সংঘবদ্ধ অপরাধচক্রের সহযোগিতায় চোরাচালান, প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে ১৩৩ কোটি টাকার বেশি অর্থ মানিলন্ডারিং করেছেন। এই অপরাধের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুর থানায় তার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অবৈধ গরু আমদানি ও প্রতারণা
সিআইডির একই কর্মকর্তা জানান, সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেড প্রতারণামূলক কৌশল ব্যবহার করে থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে গরু ও মহিষ বাংলাদেশে এনে বিক্রি করতো। ভুটান ও নেপাল থেকে ছোট আকৃতির গরু এনে বাজারজাত করা হতো। দেশীয় গরুকে বিদেশি ব্রাহমা জাতের গরু বলে প্রচার করে কোরবানির বাজারে উচ্চমূল্যে বিক্রি করতো।
জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি গরু আত্মসাৎ
সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, ঢাকা কাস্টমস হাউজের আটক করা ১৫টি ব্রাহমা জাতের গরু সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জবাই করে মাংস বিক্রির কথা ছিল। কিন্তু ইমরান হোসেন কাগজপত্রে জবাই দেখিয়ে প্রকৃতপক্ষে গরুগুলো আত্মসাৎ করেন এবং তার ফার্মে রেখে কোরবানির সময় বিক্রি করেন।
সিআইডি আরও জানায়, ইমরান হোসেন ১১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা তার মালিকানাধীন জালালাবাদ মেটাল লিমিটেডের নামে এফডিআর খুলে বিনিয়োগ করেন। এটি মানিলন্ডারিং করা অর্থকে বৈধ করার একটি প্রচেষ্টা ছিল।
এছাড়া, মোহাম্মদপুর থানার বেড়িবাঁধ এলাকায় রামচন্দ্রপুর সরকারি খাল ভরাট ও দখল করে ইমরান হোসেন তার অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন।
সিআইডি আরও জানায়, ইমরান হোসেনের প্রতারণামূলক চক্রে সাদিক অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল আলম জেনিথসহ একই প্রতিষ্ঠানের অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জন ব্যক্তি জড়িত।
সিআইডির দেওয়া তথ্য মতে, গ্রেফতার মো. ইমরান হোসেনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।