বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী পদে এক বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেতে যাচ্ছেন হাবিবুর রহমান। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ৪টি মামলাসহ বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। এরপরও সোমবার (৩ মার্চ) বেবিচকের বোর্ড সভায় তার নিয়োগের বিষয়ে সর্বসম্মতি প্রদান করা হয়। এক বছরের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের প্রস্তাবনায় স্বাক্ষর করেন বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া। আগামী ২৩ মার্চ বেবিচকের বর্তমান প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানের অবসরে যাওয়ার কথা রয়েছে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভুঁইয়া বাংলা ট্রিবিউনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যোগ্য ও সৎ লোক হওয়ায় আমরা তার ওপরই আস্থা রাখছি। তাকে দায়িত্ব দেওয়া না হলে চলমান প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনকি কিছু প্রকল্প বন্ধও হয়ে যেতে পারে। এগুলো বন্ধ হলে বেবিচকের শত শত কোটি টাকা নষ্ট হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, তার মেধা ও মননশীলতা কাজে লাগালে আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারবো।’
এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তদন্তও হচ্ছে। এখনও তো এর কোনও রেজাল্ট আসেনি। যতক্ষণ না তিনি দোষী প্রমাণিত হচ্ছেন, ততক্ষণ আমরা তাকে দোষী বলতে পারবো না। তিনি পরিস্থিতির শিকারও হতে পারেন।’
বেবিচক চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘সব কিছু বিচার-বিশ্লেষণ করে আমরা মনে করেছি—তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা আরও উপকৃত হবো। চলমান প্রকল্পও শেষ করতে পারবো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে গেজেট হয়ে এলে তিনি নতুন করে তার স্থলাভিষিক্ত হবেন।’
জানা যায়, বিমানবন্দরের উন্নয়নের নামে হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে গত ২৭ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহিবুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) সাবেক চেয়ারম্যান এম মফিদুর রহমান, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল মালেক, সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার (বর্তমানে প্রধান প্রকৌশলী) মো. হাবিবুর রহমানসহ মোট ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক।
পর দিন ২৮ জানুয়ারি হাবিবুর রহমানসহ মামলার প্রধান আট আসামির বিরুদ্ধে দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন। তারা যেন কোনোভাবেই দেশত্যাগ করতে না পারেন সে বিষয়ে দেশের সব বন্দর, ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রুল জারি করেন হাইকোর্ট।