অন্তর্বতী সরকারের শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য চালককে দায়ী করার প্রবণতা রয়েছে। এ ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ সব দুর্ঘটনার জন্য চালক-হেলপার দায়ী থাকেন না। বিভিন্ন কারণে সড়ক দুর্ঘটনা হয়ে থাকে। এর জন্য সড়ক অবকাঠামো, গাড়ি, পথচারী, চালকও দায়ী থাকেন।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ওয়ার্ক অ্যান্ড হেলথ সেফটি এসিস্ট্যান্ট সেন্টার আয়োজিত ‘বিদ্যমান সড়ক ব্যাবস্থাপনায় দুর্ঘটনা প্রশমনে কতটুকু কার্যকর’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিচার ছাড়া চালকে দোষী সাবস্ত করা যাবে না। সড়ক দুর্ঘটনায় চালক দোষী হলে তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে। কিন্তু দুর্ঘটনারস্থলে চালকে দোষী বলা বা গ্রেফতার করা যাবে না।’
সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘সবচেয়ে দামী গাড়িতে দামী মানুষ চলেন। দামী মানুষকে নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানোর দায়িত্ব থাকে চালকের ওপর। চালকের মনে যত কষ্টই থাকুক তার কাজ যাত্রীদের সেবা দেওয়া। চালকের প্রতি রাষ্ট্র ও গাড়ি মালিকের দায়িত্ব রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গাড়ির চাকা ঘুরলে মালিকের পকেটে টাকা আসে। সে চাকা যে ঘুরায় তার দায়িত্ব মালিককে নিতে হবে। চালকের বিশ্রাম নেওয়ার দরকার কতটুকু, সেই বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ কতটা আছে সেটা দেখতে হবে। শুধু চালকদের অপরাধীর কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেশের পরিবহন ব্যবস্থা ভালো হবে না।’
বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ওয়ার্ক অ্যান্ড হেলথ সেফটি এসিস্ট্যান্ট সেন্টারের প্রধান সমন্বয়কারী মো. সেলিম। তিনি সড়ক পরিবহনে বৈষম্যহীন কর্ম পরিবেশ, কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। শ্রম আইন ও সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ যেন সাংঘর্ষিক না হয় সে বিষয়ে তাগিদ দেন।
বৈঠকে আরও আলোচনায় অংশ নেন সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. নাসির উদ্দিন আহমেদ জুয়েলসহ দেশের বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার গাড়ি চালকরা।