১৩ দাবিতে সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিকদের ৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা

১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে ৫ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ।

রবিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব আব্দুল জাব্বার মিয়া।

তাদের ৫ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জমায়েত ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি পেশ, ২৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে মানববন্ধন, ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টায় বিআরটিএ সদর কার্যালয় ঘেরাও, ২৩ মার্চ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ঈদ বোনাসের দাবিতে চালকদের মানববন্ধন, ১৫ এপ্রিল ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ২৪ ঘণ্টা সিএনজি অটোরিকশার ধর্মঘট।

ঐক্য পরিষদের ১৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—  ঢাকা মহানগরী এলাকায় সিএনজি/পেট্রোলচালিত ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার অটোরিকশার ড্রাইভিং লাইসেন্সধারী চালকদের নামে বরাদ্ধকৃত ৫ হাজারসহ আরও নতুন ১৫ হাজার এবং চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকার জন্য বরাদ্দকৃত অতিরিক্ত ৪ হাজারসহ আরও নতুন ১০ হাজার সিএনজি অটোরিকশার নিবন্ধন দেওয়া, ২০০৭ সালের নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমান সিলিং বা সংখ্যাসীমা বৃদ্ধি করে দ্রুত প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গেজেট প্রকাশ করা এবং সিএনজি অটোরিক্যশা বিলি বণ্টনে ২০১৮ সালের বিআরটিএ এবং ঐক্য পরিষদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যৌথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

ঢাকায় সিএনজি অটোরিকশার ক্ষেত্রে দৈনিক মালিকের জমা ৯০০ টাকার বদলে ৮০০ টাকা এবং চট্টগ্রামে ৭০০ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ভাড়া মিটারে প্রথম ২ কিলোমিটার ৭৫ টাকা ও পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ২৭ টাকা ও ওয়েটিং চার্জ প্রতি মিনিট ৫ টাকা নির্ধারণ করা এবং বিগত দিনে অতিরিক্ত জমা নেওয়া টাকা চালকদের ফেরত দেওয়া।

২০০৭ সালের নিতীমালার নির্দেশনা অনুযায়ী ঢাকা ও চট্টগ্রামে সিএনজি অটোরিকশার পার্কিং ব্যবস্থা না করে বেআইনিভাবে নো-পার্কিং মামলাসহ ভিডিও মামলা, মিটারের ওপরে মামলা না করা এবং হয়রানিমূলক রেকারিং ও  ডাম্পিং বন্ধ করা।

সহজ শর্তে এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান, পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়নে পুনরায় হয়রানিমূলক ফিল্ডটেস্ট পরীক্ষা পদ্ধতি বাতিল করা ও পেশাদার-অপেশাদার সবার জন্য ডোপটেস্ট বাধ্যতামূলক করা এবং পেশাদার লাইসেন্সধারীর জন্য ডোপটেস্ট ফ্রি করা।

২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন থেকে সড়ক দুর্ঘটনার সব মামলা জামিনযোগ্য করা, স্পর্শকাতর মামলাগুলো নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা করা, ওয়ারেন্ট ব্যতীত গ্রেফতারের ধারা বাতিল করা, সাজার মেয়াদ ও জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে আনাসহ শ্রমিকদের স্বার্থবিরোধী সব ধারা-উপধারা সংশোধন করা।

ঢাকা মেট্রো এলাকায় বসবাসকারী চালকদের নামে ২০ হাজার গাড়ি বরাদ্দ না দেওয়া পর্যন্ত ‘ঢাকা-থ’ সিএনজি অটোরিকশা উচ্ছেদ না করা।

সারা দেশের সিএনজি অটোরিকশা, হালকা বা ধীর গতির যানবাহনগুলো অবাধে চলাচলে দেশের জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের দুই পাশে বাইলেন ও  সার্ভিস রোড এবং ক্রসিংগুলোর স্থানে আন্ডারপাস রোড অথবা ওভারপাস রোড নির্মাণ করা।

প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশা মালিক সমিতির দায়েরকৃত রিট পিটিশন মামলার বিষয়ে ২০১৯ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিআরটিএ’র আইন উপদেষ্টার প্রতিবেদন নিয়ে ওই মামলা নিষ্পত্তি করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে প্রাইভেট সিএনজি অটোরিকশার বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করা।

২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী শ্রমিক প্রতিনিধিসহ সব অংশিজনের মতামত নিয়ে নতুন জাতীয় নীতিমালা গ্রহণ করে জারি করা।

২০২৩ সালের অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন বিল বাতিল কো এবং অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার দেওয়া।

সিএনজি অটোরিকশার মালিক নামে মধ্যসত্বভোগী বাদ দিয়ে ‘চালকরাই হবেন গাড়ির মালিক’ বাস্তবায়নে চালকদের নামে নতুন রেজিস্ট্রেশন দেওয়া।

অবৈধভাবে দুর্ঘটনাপ্রবণ কাভারভ্যান ও লরিতে বসানো ২০০-৩০০ সিলিন্ডারে এবং খোলা ভ্যানে বসানো ২-৩টা সিলিন্ডডারে গ্যাস দেওয়া বন্ধ করা, ২৪ ঘণ্টা সিএনজি পাম্প খোলা রাখা এবং ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাম্পে সিএনজি অটোরিকশার জন্য আলাদা নজেল স্থাপন করে অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস দেওয়া।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহনাগরীতে রাইড শেয়ারিংয়ের নামে চলাচলকারী সব চালকদের জন্য নির্দিষ্ট ইউনিফরম পরিধান বাধ্যতামূলক করা, অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের বাণিজ্যিক ব্যবহার বন্ধ করা, এনলিস্টেড গাড়ি ব্যতীত রাইড শেয়ারিংয়ের নামে অন্য গাড়ি চলতে না দেওয়া এবং এনলিস্টেড তালিকা ট্রাফিক সার্জেন্টের ওয়েবসাইডে দেওয়া।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক রুহুল আমিন মুন্সির সভাপতিত্বে সাংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— যুগ্ম আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন দুলাল, খলিলুর রহমান, আলমগীর কবীর, ফারুক হোসেন (চট্টগ্রাম), আবুল কালাম, জুয়েল মালতিয়া, শাহ আলম, নুর মোরশেদ, খোরশেদ আলম, মোতালেব শরিফ, আলমগীর হোসেন, মমিন পাটোয়ারী প্রমুখ।