সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’র অংশ হিসেবে টানা পঞ্চমদিনের মতো গুলশান-মহাখালী সড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোনরত শিক্ষার্থীরা। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় তিতুমীর কলেজের সামনে সড়কে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করেন তারা।
অবরোধের কারণে মহাখালী-গুলশান সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীবহনকারী যানবাহনগুলোকে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এদিকে শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
অন্যদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মাইকে বলতে শোনা যায়, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। অবরোধ চলাকালীন সময়ে অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। এখন আমরা লিংক রোড অবরোধ করেছি। কিছু সময় পর অন্যান্য জায়গাগুলোও অবরোধ করা হবে।
এ সময় ‘আমার ভাইয়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, শাহবাগ না মহাখালী, মহাখালী মহাখালী’সহ নানা স্লোগান দিতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এদিকে অবরোধের পাশাপাশি তিতুমীর কলেজের সামনে শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচিও চলছে।
এর আগে রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাতে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি ও কলেজ শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রাত ১১টায় কলেজের মূল ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিতুমীর ঐক্যের উপদেষ্টা মাহমুদুল হাসান মুক্তার। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করছি। কিন্তু রাষ্ট্র বারবার আমাদের সঙ্গে দ্বিচারিতা করছে। সে জন্য আমরা সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য তিতুমীর কলেজ শাটডাউন ঘোষণা করছি। এ সময়ের মধ্যে কোনও ক্লাস-পরীক্ষা কিংবা একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম হবে না। তিতুমীর কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার পরেই তিতুমীরের গেটের তালা খোলা হবে।’
তিনি আরও জানান, সোমবার ১১টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মহাখালী রেল ক্রসিংয়ে রেলপথ, আমতলী মোড়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, মহাখালী-গুলশান সড়ক এবং গুলশান লিংক রোডে সর্বাত্মক অবরোধ করবেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাতের মধ্যে যদি দাবির বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা না হয় কিংবা দাবি মেনে নেওয়া না হয় তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন মাহমুদুল হাসান মুক্তার।
এ সময় তিনি তিন দফা দাবিও তুলে ধরেন। সেগুলো হলো–
১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।
২. শিক্ষা উপদেষ্টার বক্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের সব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করে যোগ্যতা বিবেচনায় নিজস্ব প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।
৩. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আইন উপদেষ্টার চাপ সৃষ্টির ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টির দায় নিয়ে আইন উপদেষ্টাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
এদিকে সোমবার মহাখালী এলাকায় বিজিবির সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। আমতলীতে পুলিশের একটি জলকামানও দেখা যায়।