‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের

বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান মহোদয় এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন— আমাদের দাবি যৌক্তিক, তিনি রাষ্ট্রকে বিষয়টি জানাবেন। শিক্ষার্থীরা অনশনরত অবস্থায় মারা যাবে, আর তারা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ধীরে-সুস্থে কাজ করার কথা ভাবছে। এ ধরনের বক্তব্য শিক্ষার্থীরা আশা করেননি।’

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৪টার মধ্যে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের সাত দফা দাবি মেনে নিয়ে ‘তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে’ রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না দেওয়া হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ বা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে বলেও জানান শিক্ষার্থীরা। তারা জানান, রেল ও সড়কপথ এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ইজতেমার কথা বিবেচনায় অনির্দিষ্টকালের এই কর্মসূচি চলাকালে কিছুটা শিথিলতা থাকবে। ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ইজতেমায় যোগ দেওয়া মুসল্লিদের জন্য ব্যারিকেড শিথিল থাকবে। এই সময়ের মধ্যে মুসল্লিদের ইজতেমায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

এক পর্যায়ে হল থেকে বেরিয়ে আসেন নারী শিক্ষার্থীরাও

প্রসঙ্গত, ‘বারাসাত বিদ্রোহ’ ছিল ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের নেতা তিতুমীরের (সৈয়দ মীর নিসার আলী) নেতৃত্বে পরাশক্তির বিরুদ্ধে বাঙালিদের প্রথম সফল প্রতিরোধ আন্দোলন। স্থানীয় জমিদারদের শোষণ থেকে কৃষক-প্রজাকে মুক্তির জন্য তিতুমীর যে আন্দোলনের সূত্রপাত করেছিলেন, তা ঘটনার পরিক্রমায় বারাসাত বিদ্রোহে পরিণত হয়। গত মাসে সেই নামে প্রথম কর্মসূচির ডাক দেয় সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রায় ১ মাসেরও বেশি সময় পরে আবারও ফিরে এলো ‘বারাসাত ব্যারিকেড’ কর্মসূচি।

কর্মসূচি ঘোষণার আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশান-১ নম্বর গোলচত্বর অবরোধ করেন আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা। পরে প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে আবারও কলেজের সামনে গিয়ে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে হল থেকে নারী শিক্ষার্থীরাও বেরিয়ে এসে কর্মসূচিতে সমর্থন জানান।

উল্লেখ্য, সাত দফা দাবি আদায়ে শুক্রবার তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনশনরত অবস্থায় ইতোমধ্যে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সহপাঠীরা তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।