দেশের ব্যবসায়ী নেতারা বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার উচ্চ বিনিময় হার, আমদানি খরচ বৃদ্ধি, উচ্চ জ্বালানি ব্যয়, উচ্চ সুদের হার এবং বৈশ্বিক প্রভাব দেশের বিনিয়োগের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। সরকার যেখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে মূল্যস্ফীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে, সে মুহূর্তে অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় ছাড়াই মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেশের অর্থনীতির জন্য আত্মঘাতী হবে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বৈষম্যবিরোধী সংস্কার পরিষদ (এফবিসিসিআই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ব্যবসায়ী নেতারা। ‘নিয়ম বহির্ভূতভাবে পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের’ প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে এফবিসিসিআইয়ের আহ্বায়ক জাকির হোসেন নয়ন বলেন, ‘বাংলাদেশ বর্তমানে একটি কঠিন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের মাঝপথে এসেই শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে সরকার গেজেট প্রকাশ করেছে। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মূসক ও সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি করায় ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। সরকার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। হঠাৎ এ কর আরোপ এবং গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব দেশের সার্বিক জাতীয় অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।’
জাকির হোসেন নামে একজন বলেন, ‘সব ধরনের রেস্তোরার বিলের ওপর ১০ শতাংশ হারে ভ্যাট বৃদ্ধির পাশাপাশি দোকান ও সুপার মার্কেটে বিক্রির ওপরও ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। এতে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তাছাড়াও আমদানি করা ফল, মুঠোফোন সেবা, ইন্টারনেট, টিস্যু, এলপিজি গ্যাস, পোশাক প্রভৃতির ক্ষেত্রেও বিভিন্ন হারে মূসক বাড়ানো হয়েছে। যেহেতু এসব পণ্য ও সেবা জীবনযাত্রারই সার্বক্ষণিক অনুষঙ্গ সে জন্য অতিরিক্ত কর বৃদ্ধির ফলে সব আয়ের মানুষের ওপর এর চাপ পড়বে। ওষুধের ওপরও ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’
এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম হায়দার বলেন, ‘এখন বাজারের দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বমুখী। এ মুহূর্তে সরকার কর আরোপ করলো কেন? এটা একদমই অনুচিত।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন– এফবিসিসিআই’র সহায়ক অ্যাসোসিয়েট অ্যডমিনেস্টেটর ও বারভিডার সভাপতি আব্দুল হক, বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি মো. ওসমান গনি, এফবিসিসিআই’র সদস্য আতিকুর রহমান প্রমুখ।