যারা গণঅভ্যুত্থানের শক্তি হয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছেন, সেই মানুষগুলোই এখন জনবিরোধী আচরণ করছে। আমাদেরই বন্ধুবান্ধব, ভাই-ব্রাদার তারা আজ ক্ষমতায় আছেন। আবার আমাদেরই সহযোদ্ধা, যারা অভ্যুত্থানে জনসংযোগ করেছেন তারা আজকে মাঠে আন্দোলন করছেন। একটা অভ্যুত্থান এক শ্রেণির মানুষকে আকাশের চূড়ায় নিয়ে যায়, আরেক শ্রেণির মানুষকে কোথাও জায়গা দেয় না।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর কাওরান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্কে গিয়ে বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে এসব কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা।
ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাওরান বাজার থেকে পলাশী পর্যন্ত অংশ নির্মাণের প্রকল্প বাতিলের দাবিতে প্রায় এক মাস ধরে পান্থকুঞ্জ পার্কে অবস্থান করছেন বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের কর্মীরা। সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ সাংস্কৃতিক সমাবেশ করেন তারা।
সমাবেশে অংশ নিয়ে উমামা ফাতেমা বলেন, ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করার মতো বিষয়কে অন্তর্বর্তী সরকার প্রাধান্য দিচ্ছে না। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের বিধ্বংসী উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে কথা বললে তা শোনা হতো না। এটা খুবই দুঃখজনক যে একটা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কিন্তু আজ তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হচ্ছে।
উমামা আরও বলেন, এই শহরে ন্যূনতম বাসযোগ্যতা নেই। গত ১৫ বছরে ঢাকাকে ডাস্টবিনে রূপান্তর করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে শহরকে নিয়ে পরিকল্পনা করার। নগরবাসী ২০ বছর পর কেমন ঢাকা দেখতে চায়, সেটার জন্য সবাইকে সরকার ডাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই নেত্রী আরও বলেন, ঢাকা শহরে মানুষের বাসযোগ্যতা সংকুচিত হয়ে আসায় বিতৃষ্ণা তৈরি হওয়া– এই অভ্যুত্থানের পেছনে বড় কারণ ছিল। সরকার এ বিষয়গুলোকে আমলে নেয়নি। তারা শুধু গায়েবি কথাবার্তা, মুজিববাদ, মানে খুবই গায়েবি কথাবার্তা দিয়ে অভ্যুত্থানকে জাস্টিফাই করতে চায়।
উল্লেখ্য, জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২৩ পাওয়া আব্দুল ওয়াহিদ সরদার এই সাংস্কৃতিক সমাবেশের উদ্বোধন করেন। সমাবেশে ‘বৃক্ষ সখা’ শীর্ষক নাটক পরিবেশন করেন বটতলা'র সদস্যরা। সমাবেশে গান পরিবেশন করেন সমগীত, হাফ হার্টেড স্যুডোস, বেতাল, মায়ানগর।
এছাড়াও সাংস্কৃতিক সমাবেশে নিজেদের শিল্পকর্ম পরিবেশন করেন সৈয়দ মুহাম্মদ জাকির, ফয়সাল মাহমুদ, নিলয়, তানভীর অভি, শিকদার সৈকত, কেপি রাজিব, আহাদুল সিরাজ, বিজয় আকাশ, মুরসালিন রিফাত প্রমুখ।