সিনিয়র সচিবের হিজবুত তাহরীর-সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ভারতীয় প্রতিবেদন বানোয়াট: সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে হিজবুত তাহরীরের একজন প্রতিষ্ঠাতা বলে দাবি করা ভারতীয় সংবাদ মিথ্যা ও বানোয়াট বলে জানিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাক্টস।

রবিবার (৫ জানুয়ারি) এক ফেসবুক পোস্টে একথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, হিযবুত তাহরীর বাংলাদেশে একটি নিষিদ্ধ সংগঠন। কোনও সরকারি কর্মকর্তার নিষিদ্ধ রাজনৈতিক সংগঠনে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। নাসিমুল গনি ছাত্রাবস্থায়ও কখনও কোনও রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলেন না।

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস জানায়, সম্প্রতি ভারতীয় সাংবাদিক পালকি শর্মা ‘ফার্স্ট পোস্ট’ নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল ও বিডি ডাইজেস্ট  নামে একটি নিউজ পোর্টালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে জড়িয়ে একটি মিথ‍্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের একজন প্রতিষ্ঠাতা।

প্রমাণ হিসেবে পালকি শর্মা এবং বিডি ডাইজেস্টের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়েছেন, যা ২০০৮ সালে দ্য ডেইলি স্টারে প্রকাশিত হয়েছিল। অথচ ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা নাসিমুল গনি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি  দুজন ভিন্ন ব্যক্তি। হিযবুত তাহরীর নেতা নাসিমুল গণি—  যার প্রকৃত নাম নাসিম গনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক।

অপরদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বাংলাদেশের একজন শীর্ষ আমলা। তিনি একজন বাংলাদেশি নাগরিক,  তার কোনও দ্বৈত পাসপোর্ট নেই, তিনি অন্য কোনও দেশে বসবাসও করেন না।

সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি উজ্জ্বল শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৮৩ সালে দেশের সিভিল সার্ভিসে যোগ দেন। ২০০০ এর দশকের গোড়ার দিকে যখন তিনি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের তৎকালীন স্পিকারের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তখন তিনি বেশ কয়েকবার ব্রিটেন ভ্রমণ করেন। ২০০৮ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বার্ডফোর্ড থেকে টপ ম্যানেজমেন্ট বিষয়ে ৪৫ দিনব্যাপী একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নেন।

অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর বাংলাদেশ পুলিশ হিযবুত তাহরীরের বেশ কয়েকজন সদস্যকে অবৈধ কার্যকলাপের জন্য গ্রেফতার করেছে। সংগঠনটির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কোনও পরিকল্পনা সরকারের নেই।

হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। আমরা মনে করি, ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে যে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে— তার অংশ হিসেবেই এই মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে।